|
|
|
|
টাটা মোটরস কর্তা মৃত, সন্দেহ আত্মহত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৭ জানুয়ারি |
তাইল্যান্ডের হোটেলে ২৩ তলার ঘর থেকে ‘পড়ে’ মারা গেলেন টাটা মোটরসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) কার্ল স্লিম। প্রাথমিক তদন্তে তাই-পুলিশের অনুমান, জানলা দিয়ে লাফিয়ে আত্মহত্যাই করেছেন তিনি।
গাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই মত, ভারতে যাত্রী-গাড়ির বাজারে ক্রমশ পায়ের তলার মাটি খোয়াতে থাকা টাটা মোটরসকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে একের পর এক সাহসী সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন ব্রিটিশ কার্ল। তার ফল ফলতে শুরু করার ঠিক আগেই মারা গেলেন তিনি। ফলে টাটাদের গাড়ি সংস্থার ঘুরে দাঁড়ানো বিলম্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কিত শেয়ার বাজার। তাই তাঁর মৃত্যুর পর সোমবার প্রথম বাজার খুলতেই বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে সংস্থার শেয়ার দর পড়েছে ৬%।
অন্যতম শীর্ষ কর্তা হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা, তাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, ইন্দোনেশিয়াতেও টাটা মোটরসের ব্যবসা দেখতেন কার্ল। তাই সংস্থার তাইল্যান্ড শাখার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে যোগ দিতে গত শুক্রবার সস্ত্রীক ব্যাঙ্কক পৌঁছন তিনি। উঠেছিলেন শাংরি-লা হোটেলে। গত রবিবার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে পাঁচ তলার উপর কার্লের দেহ চোখে পড়ে হোটেল কর্মীদের। তাঁর স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে খবর দেন তাঁরা।
তাই-পুলিশের বক্তব্য, ধস্তাধস্তি বা জোর করার চিহ্ন কার্লের শরীরে মেলেনি। বরং তাঁর হোটেলের ঘরে একটি জানলা খোলা পাওয়া গিয়েছে। অনুমান, সেখান থেকেই ঝাঁপ দেন তিনি। পুলিশের মতে, লম্বা-চওড়া কার্লকে ওই ছোট জানলা দিয়ে ঠেলে ফেলা শক্ত। প্রায় অসম্ভব পা হড়কে পড়াও। টাটা মোটরস-কর্তার হোটেলের ঘর থেকে ইংরেজিতে লেখা তিন পাতার নোটও পেয়েছে পুলিশ। তা থেকে মৃত্যুর কারণ সামনে আসবে বলে মনে করছে তারা।
২০১২-র অক্টোবরে এমডি হিসেবে টাটা মোটরসে যোগ দেন কার্ল। তার আগে দু’দশক পৃথিবীর বিভিন্ন গাড়ি সংস্থায় দায়িত্ব সামলান তিনি। বিশ্বজোড়া মন্দায় মার্কিন গাড়ি বহুজাতিক জেনারেল মোটরস দেউলিয়া ঘোষণার পরেও ভারতে তাদের ব্যবসাকে সাফল্যের মুখ দেখিয়েছেন।
অনেকেই মনে করেন, দেশের বাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা হিসেবেই তাঁকে এমডি করে আনে টাটা মোটরস। ২০১০-র পর কোনও নতুন মডেলের দেখা নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই চ্যালেঞ্জ সামলানোর চেষ্টাও করেন তিনি। সম্প্রতি যাত্রী-গাড়ির জন্য নতুন পেট্রোল ইঞ্জিন এনেছে টাটা মোটরস। অদূর ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ নতুন গাড়িও বাজারে আসার কথা। কখনও খরচ কমাতে স্বেচ্ছাবসরের পরিকল্পনার কথা বলেন, কখনও ন্যানোকে নতুন ভাবে আনতে চেয়েছেন বাজারে। কিন্তু সেই সব পদক্ষেপ কতটা সফল হল, তা দেখার জন্য রইলেন না তিনি। ঘনিষ্ঠরা বলেন, ভারতে এসে গোড়ায় এই দেশের সঙ্গে মানাতে সমস্যায় পড়েন কার্ল ও তাঁর স্ত্রী। ৩০ বছরের বিবাহিত জীবনে এখানে থিতু হওয়াই সম্ভবত সব থেকে কঠিন ঠেকেছিল তাঁদের। তার পর সংস্থার অফিস থেকে সাংবাদিক সম্মেলন, বরাবর হাসিখুশি হিসেবেই কার্লকে দেখেছে সবাই। ট্যুইটার অ্যাকাউন্টেও লেখা এমন এক ব্রিটিশ, যিনি ভারত থেকে দূরে থাকার কথা ভাবতেই পারেন না।
রবিবার অবশ্য ভারত ছেড়ে অনেক দূর চলে গেলেন তিনি। |
|
|
|
|
|