|
|
|
|
প্রণবকে বিঁধে নয়া বিতর্কে আপ মন্ত্রী সোমনাথ
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২৭ জানুয়ারি |
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতাকে টুইটারে কটাক্ষ করে নতুন বিতর্কে জড়ালেন দিল্লির আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতী। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে ক্রমশ চাপ বাড়ছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উপর। আজ সোমনাথের ইস্তফার দাবিতে সচিবালয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের সামনে ধর্নায় বসেন বিজেপি বিধায়কেরা। গত রাতে বিক্ষুব্ধ বিধায়ক বিনোদ বিন্নিকে বহিষ্কার করেছে আপ। আজ যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসেন তিনিও। অর্থাৎ যে ধর্নাকে হাতিয়ার করেই আজ দিল্লির তখ্তে কেজরিওয়াল, সেই অস্ত্রেই তাঁকে ঘায়েল করতে উদ্যত বিরোধীরা।
প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে নিজের বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, “জনপ্রিয়তার নামে নৈরাজ্য প্রশাসনের বিকল্প হতে পারে না।” বিজেপি-কংগ্রেস শিবিরের মতে, পরোক্ষে আম আদমি পার্টিরই সমালোচনা করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। তা সত্ত্বেও গত কাল বিকেলে রাষ্ট্রপতির চা চক্রে সস্ত্রীক কেজরিওয়ালের উপস্থিতি দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন, সম্ভবত যুদ্ধং দেহি মনোভাব বদলাচ্ছে আপ শিবির। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সোমনাথের ওই বিতর্কিত টুইট। আইনমন্ত্রী লেখেন, ‘যদি আপ-এর কার্যকলাপ নৈরাজ্যপূর্ণ হয়, তা হলে ১৯৮৪ বা ২০০২-এর দাঙ্গাকে কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন মাননীয় রাষ্ট্রপতি? বিক্ষোভ! খুব ভাল রসিকতা।’ পরে অবশ্য ওই টুইট মুছেও দেন সোমনাথ। কিন্তু সমালোচনা এড়াতে পারেননি।
বিদেশিনি-নিগ্রহ কাণ্ডেও ফের সুর চড়িয়েছেন সোমনাথ। প্রমাণ নষ্টের অভিযোগ তুলেছেন দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। গত শনিবারই প্রথম বার ওই ঘটনায় নিজের ভুল স্বীকার করেছিলেন সোমনাথ। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই বলেন, “রাষ্ট্রপতির দেওয়া চা চক্রে তিন-চারজন ছাড়া সকলেই আমার কাজের প্রশংসা করেছেন। অনেকে সাহায্য করতে চেয়েছেন। ট্র্যাফিক সিগন্যালে বহু মহিলা আমায় সাধুবাদ জানিয়েছেন।”
আইনমন্ত্রীর এই যুক্তি অবশ্য বিরোধী শিবির শুনতে নারাজ। তাঁর ইস্তফার দাবিতে সচিবালয়ে ধর্নার পাশাপাশি কেজরিওয়ালকে স্মারকলিপি দেন বিরোধী দলনেতা হর্ষবর্ধন। তিনি বলেন, “আইনমন্ত্রী সমস্ত শিষ্টাচারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করব।” তবে আপ নেতৃত্বের একটি অংশও মনে করছে, অবিলম্বে সোমনাথের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা উচিত। কারণ, লোকসভা ভোটের আগে প্রতিদিন তাঁর জন্য অহেতুক বিতর্কে জড়িয়ে দলের প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে। বস্তুত, আজই আপ নেতৃত্ব জানিয়েছেন, লোকসভায় অন্তত আড়াইশো আসনে লড়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁর।
সোমনাথের পাশাপাশি এ দিন কেজরিওয়ালের অশান্তি বাড়িয়ে দেয় বিন্নির ধর্না। নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে আপ সরে যাচ্ছে, এই অভিযোগে প্রথমে অনির্দিষ্টকালীন অনশনে বসেছিলেন বিন্নি। কিন্তু চার ঘণ্টা পরেই ইতি টেনে বলেন, “আমায় অণ্ণা হজারে বলেছেন অনশন তুলে নিতে। তার বদলে আপের দ্বিচারিতা জনগণের সামনে তুলে ধরতে নির্দেশ দিয়েছেন।” একই সঙ্গে তাঁর হুমকি, আগামী দশ দিনের মধ্যে আপ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালনে তৎপর না হলে তিনি বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।
আগামি কাল এক মাস পূর্ণ হচ্ছে কেজরিওয়াল সরকারের। সেই এক মাসের কাজের খতিয়ান জনগণের সামনে তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজই অবশ্য গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জেরে রাজধানীর অটোচালকদের রোষের মুখে পড়েছে তাঁর সরকার। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই অটোচালকদের অধিকাংশই কেজরিওয়াল সমর্থক বলে মনে করা হয়। এই বিড়ম্বনার পাশাপাশি আজই আবার দিল্লি হাইকোর্ট আজ রাজধানীর রাত্রিবাসগুলির পরিকাঠামো নিয়ে দিল্লি প্রশাসনের সমালোচনা করেছে। বিরোধীদের দাবি, বর্তমান ঘটনাপ্রবাহের জেরে রাজধানীতে জনভিত্তি কমেছে কেজরিওয়ালের। এবিপি নিউজের সমীক্ষাও সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও আপ-এর দাবি, সারা দেশে তাদের মোট সদস্য সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটে দাঁড়াতে চেয়ে সারা দেশ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার আবেদনপত্র পেয়েছে তারা। শুধু দিল্লি থেকেই এসেছে হাজারখানেক। তা থেকে বাছাই করে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
|
পুরনো খবর: ও ভাবে যাওয়া ঠিক হয়নি, কবুল ভারতীর |
|
|
|
|
|