দমদমের সুভাষনগরের মা ও মেয়ে নমিতা গুনিন ও শ্রেয়সী গুনিনকে খুন করে কোনও পরিচিতই। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। সেই সঙ্গে পুলিশের অনুমান, ব্যক্তিগত আক্রোশেই এই খুন। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এডিসি (বেলঘরিয়া) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “প্রাথমিক ভাবে অনুমান, শ্বাসরোধের পরে ধারালো অস্ত্রে খুন করা হয়েছে দু’জনকে। পুলিশ শ্রেয়সী ও নমিতার আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।” শ্রেয়সীর বাবা সৌমেন্দ্রবাবুকেও সোমবার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তিনিই শনিবার প্রথম দেহ দু’টি দেখেছিলেন।
পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের অনুমান, শনিবার ঘটনাটি ঘটে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ। পুলিশ জেনেছে, বিকেল তিনটে নাগাদ শ্রেয়সী ও তার এক বান্ধবী ছাদে ছিল। সে-ও ওই ফ্ল্যাটেই থাকে। কিছুক্ষণ পরে শ্রেয়সী নীচে যায়। চারতলায় শ্রেয়সীদের উল্টো দিকের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা রাজশ্রী সানি নামে এক মহিলা বলেন, “সওয়া চারটে নাগাদ উল্টো দিকের ফ্ল্যাটে ধুপধাপ শব্দ পাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাদ থেকে হুড়মুড় করে নেমে শ্রেয়সীর বন্ধু আমাদের বাড়িতে ঢুকে জল চায়। বলে শরীর খারাপ লাগছে। কিছুক্ষণ পরে ও নীচে নিজের ফ্ল্যাটে চলে যায়।”
দুই বান্ধবীর খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে পুলিশ জেনেছে। খুনের পিছনে ত্রিকোণ প্রেম রয়েছে কি না, দেখা হচ্ছে। শ্রেয়সীর বান্ধবী কেন ছাদ থেকে হুড়মুড়িয়ে নেমে প্রতিবেশীর বাড়িতে ঢুকে অসুস্থ বোধ করল, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশ জেনেছে, শ্রেয়সীর মা মেয়েকে ওই বান্ধবীর সঙ্গে মিশতে বারণ করতেন। সেই সংক্রান্ত অশান্তিতে এই ঘটনা কি না, তা-ও পুলিশ দেখছে। পুলিশ জেনেছে, দুপুরে সচরাচর ওই বাড়িতে অপরিচিত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হতো না। ফলে আততায়ীরা পরিচিত কি না দেখা হচ্ছে। এ দিন ফরেন্সিক দল ওই ফ্ল্যাট থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে। আলমারিতে হাতের আঙুলের দু’টি ছাপ মিলেছে। সেগুলি একই ব্যক্তির কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মা ও মেয়ের খাবারে মাদক মিশিয়ে অজ্ঞান করা হয়েছিল কি না, দেখছে পুলিশ।
|