পরিসংখ্যানের দিক থেকে গত সপ্তাহটা ছিল নজির ভাঙার। রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছিল সেনসেক্স ও নিফ্টি। এতে অবশ্য আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়নি সাধারণ লগ্নিকারীদের মনে। বহু শেয়ারই সামিল হয়নি উত্থানে। কিছুটা উঠে আবার মাথা নত করেছে মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ শেয়ার। ফলে, অনেক ক্ষেত্রেই পোর্টফোলিওর মোট মূল্যায়ন বাড়েনি। ক্ষেত্র হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অবস্থা খারাপই বলতে হবে। তেমন শক্তি নেই ইস্পাত, সিমেন্ট, মূলধনী পণ্যের মতো মূল শিল্প শেয়ারগুলির। বাজার উঠেছে তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ এবং এফ এম সি জি শেয়ারকে ভর করে। অর্থাৎ এই উত্থানে খুশিতে ডগমগ হওয়ার কারণ নেই। রেকর্ড গড়ার পর স্বাভাবিক নিয়মে শুক্রবার কিছুটা পতন হয়েছে বাজারের।
সোমবার কিন্তু বড় রকমের পতন হয়েছে সূচকের। সেনসেক্স এবং নিফ্টি নেমেছে যথাক্রমে ৪২৬ ও ১৩১ অঙ্ক। ফলে, মুম্বই সূচক আবার নেমেছে ২১ হাজারের নীচে। সোমবার ডলারে টাকার পতন এবং বিশ্ব বাজারের দুর্বলতাকেই এর জন্য দায়ী করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করছেন পতনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বরং এটাই সুযোগ তুলনায় কম দামে ভাল শেয়ার কেনার।
প্রথম পর্যায়ে একগুচ্ছ ভাল আর্থিক ফলাফল আমরা পেয়েছি। দ্বিতীয় দফার ফল ততটা ভাল না-ও হতে পারে। অর্থাৎ এখান থেকে সূচক আর উঠবে, এই আশা না-করাই ভাল। বাজার তবেই উঠবে, যদি আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর পথে হাঁটে। পাইকারি ও খুচরো দুই সূচক অনুযায়ীই পণ্যমূল্য সম্প্রতি কমেছে। ফলে, সুদ কমতে পারে এমন ক্ষীণ আশা জেগেছে অনেকের মনে। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, রঘুরাম রাজন এখনই হয়তো সে পথে হাঁটবেন না। আর এক দফা দাম কমলে তবে সুদ কমার সম্ভাবনা প্রবল হবে।
মূল্যবৃদ্ধি কমায় এবং সুদ কমার সম্ভাবনায় বন্ড ও ঋণপত্রের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সুদ যদি সত্যিই কমে, তবে এখন বন্ডে লগ্নি লাভজনক হতে পারে।
ডলারের দাম ৬১/৬২ টাকায় দাঁড়িয়ে যাওয়ায় সোনাও কিছুটা স্থিতি পেয়েছে। চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতি কমে আসায় সোনা আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তা হলে সোনার দামে বড় রকমের উত্থান হয়তো দেখতে পাব না। সোমবার অবশ্য ডলারের দাম বাড়ায় বেড়েছে সোনাও। শেয়ার বাজার তেজী থাকায় ন্যাভ্ বেড়েছে বেশির ভাগ ইক্যুইটি-নির্ভর মিউচুয়াল প্রকল্পের। উল্টোটা হয়েছে ঋণপত্র-নির্ভর প্রকল্পে। সুদ কমলে সুদিন ফিরবে দু’ধরনের প্রকল্পেই। এই আশায় রয়েছেন অনেকে।
শেষ হয়ে এল নতুন বছরের প্রথম মাস। কর সাশ্রয়ে লগ্নি সেরে ফেলতে হবে দ্রুত। ব্যাঙ্কের কর সাশ্রয়ী জমায় এখনও সুদ ৯%। যাঁরা ব্যাঙ্কেই টাকা রাখতে চান, তাঁরা সুদ কমার আগেই এই প্রকল্পে টাকা গচ্ছিত করার কথা ভাবতে পারেন। কর সাশ্রয়ী প্রকল্পে ‘এএএ’ রেটিং যুক্ত ন্যাশনাল হাউসিং ব্যাঙ্ক সুদ দিচ্ছে ৯.২৫%। ‘এনএইচবি সুবৃদ্ধি’ কর সাশ্রয়ী প্রকল্পে প্রবীণদের সুদ ৯.৮৫%। |