গদ্দাফির নির্যাতন-কাহিনি ফাঁস তথ্যচিত্রে

২৭ জানুয়ারি
প্রায়ই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হত তাঁকে। সেখান থেকেই নিজের মহিলা ‘শিকার’ বেছে নিতেন তিনি। তার পরই তাদের অপহরণ করে আটকে রেখে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতন চালাতেন। সম্প্রতি ব্রিটিশ চ্যানেলের তৈরি করা একটি তথ্যচিত্রে এমনই দাবি করা হয়েছে লিবিয়ার নিহত একনায়ক মুয়াম্মর গদ্দাফি সম্পর্কে।
গদ্দাফিকে ঘিরে রয়েছে সুন্দরী মহিলাদের নিয়ে তৈরি দেহরক্ষীর দল। এমন ছবি বহু বার দেখা গিয়েছে। ওই সুন্দরী মহিলারা ছিলেন গদ্দাফির যৌনসঙ্গীও। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর দু’বছরেরও বেশি সময় পরে বানানো তথ্যচিত্রটিতে দাবি করা হয়েছে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গদ্দাফির পছন্দের মেয়েদের তাঁর মহিলা দেহরক্ষীর দল অপহরণ করে নিয়ে যেত। সেই সব মেয়ের উপরে বছরের পর বছর ধরে ধর্ষণ-সহ নানারকম অত্যাচার চালাতেন গদ্দাফি। তাঁর যৌন লালসার শিকার হয়েছেন পুরুষরাও।
তবে বেশির ভাগ সময় মেয়েরাই ছিল তাঁর ‘যৌন খেলার’ সঙ্গী। তাঁর কাছে পাঠানোর আগে ওই সব মেয়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। মেয়েগুলিকে নিয়মিত ‘পর্নোগ্রাফি’ দেখিয়ে শেখানো হত কী ভাবে গদ্দাফির সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। তথ্যচিত্রে একটি ঘরের লাগোয়া একটি ক্লিনিকও দেখানো হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, মেয়েদের গদ্দাফির কাছে পাঠানোর আগে সেই ক্লিনিকে পরীক্ষা করে দেখা হত তাঁদের কোনও যৌন সংক্রামক ব্যাধি রয়েছে কি না। মেয়েরা গর্ভবতী হয়ে পড়লে ওই ক্লিনিকেই গভর্পাত করানো হত। আর অত্যাচারের পরে যে সব মেয়েদের আর বাঁচার আশা থাকত না, তাঁদের ফেলে আসা হত পার্কে বা গাড়ি রাখার জায়গায়। সেখানেই মারা যেতেন তাঁরা।
সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলির কথা জানিয়েছেন এই রকমই এক মহিলা। তাঁর দাবি, ১৫ বছর বয়সে তাঁকে আটকে রেখে বার বার ধর্ষণ করেছেন গদ্দাফি। সাত বছর পরে সেখান থেকে কোনও রকমে পালিয়ে আসেন তিনি। গদ্দাফির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের কথাও বর্ণনা করেছেন তিনি। জানান, তাঁর স্কুলে বক্তৃতা দিতে গিয়ে গদ্দাফির তাঁকে পছন্দ হয়েছিল। পর দিন সেনার পোশাক পরা তিন মহিলা এসে বাবা-মায়ের কাছ থেকে তাঁকে নিয়ে যান। প্রথমে তাঁকে নগ্ন করে তাঁর রক্তপরীক্ষা করা হয়। মহিলা ছুটে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁর মহিলা দেহরক্ষীরা তাঁকে ধরে জোর করে গদ্দাফির খাটে তুলে দেন। একনায়ক বিভিন্ন মাদকদ্রব্য খেয়ে তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ওই মহিলার কথায়, “সেই ভয়ঙ্কর দিনের কথা জীবনেও ভুলতে পারব না।” মহিলা দেহরক্ষীদের সঙ্গেও যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন গদ্দাফি। তথ্যচিত্রটিতে গদ্দাফির এক মহিলা দেহরক্ষীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রাক্তন দেহরক্ষী জানিয়েছেন, তাঁরও একবার জোর করে গর্ভপাত করানো হয়েছিল। দেহরক্ষীদের উপরেও নানা রকম অত্যাচার করতে কসুর করতেন না গদ্দাফি। ওই মহিলার কথায়, “এক দিন আমাদের কয়েক জনকে একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় ১৭ জন পড়ুয়ার খুনের দৃশ্য দেখানোর জন্য। আমাদের চোখের সামনে ১৭ জনকে গুলি করে খুন করা হয়। কিন্তু আমাদের চিৎকার করতে দেওয়া হয়নি। বরং আমাদের উল্লাস করতে বলা হয়, যেন কোনও দারুণ ঘটনা ঘটছে। আমি খুনের দৃশ্য দেখে হাততালি দিলেও ভিতরে ভিতরে কাঁদছিলাম।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.