কয়েক মাস আগে মাছ চাষ হত। এখন সেখানে বাঁধা থাকছে ছাগল। তবে ৬ বছর আগে তৈরি হওয়া সুইমিংপুলে সাঁতারটাই এখনও শুরু হয়নি। আসানসোল ইন্ডোর স্টেডিয়ামের পাশের সুইমিং পুলটির অবস্থা এমনই।
আসানসোল মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা সূত্র জানা গিয়েছে, আসানসোল শহরে কয়েকটি ইংরেজী মাধ্যম বিদ্যালয় ও বেসরকারি সংস্থায় আলাদা করে সুইমিং পুল থাকলেও সবার শেখার জন্য আলাদা কোনও সুইমিং পুল নেই। এই কারণে ২০০৮ সালে আসানসোল স্টেডিয়াম কমিটির পক্ষ থেকে একটি সুইমিংপুল নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হলে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) তৎকালীন চেয়ারম্যান বংশগোপাল চৌধুরী সেটা অনুমোদন করেছিলেন। দ্রুততার সঙ্গে শুরু হয় কাজ। ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর ওই সুইমিং পুলটির উদ্বোধনে এসেছিলেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। স্টেডিয়াম কমিটির কর্তাদের অভিযোগ, উদ্বোধনের পরে ওই সুইমিং পুল তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও সে কাজ হয়নি। ফলে সুইমিং পুল তৈরি হওয়ার পরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। |
তিন মাস আগে আসানসোল স্টেডিয়াম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক সুইমিংপুলটি পরিদর্শন করতে এসে সুইমিং পুলের গেট তালাবন্ধ দেখে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে চাবি চান। তখন নিরাপত্তারক্ষীরা মলয়বাবুকে জানান তাঁদের কাছে কোনও চাবি নেই। নিরাপত্তারক্ষীরা অভিযোগ করেন, নিজেদের তৃণমূল নেতা পরিচয় দিয়ে স্থানীয় দুই যুবক তালা ও চাবি কেড়ে নিয়ে সুইমিং পুলের জলে মাছ চাষ করছেন। এরপরে মলয়বাবু সুইমিং পুলের গেটে পুরনো তালা ভেঙে নতুন তালা লাগানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
সুইমিং পুলটির বর্তমান অবস্থা পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেল পুরনো অবস্থার কোনও বদলই হয়নি। সুইমিং পুলের গেট তালাবন্ধই রয়েছে। পাঁচিলের উপরে উঠে চোখে পড়ল সুইমিং পুল চত্বর আর্বজনায় ভরা। তার মধ্যে চারটি ছাগল বাঁধা রয়েছে। সুইমিংপুলের দুটি জলাধারের একটিতে জল থাকলেও অন্যটিতে জল নেই।
পরিকাঠামো গত সমস্যা যেমন রয়েছে তেমনই এই সুইমিংপুলটির নির্মাণগত কিছু রয়েছে বলে দাবি করে আসানসোল স্টেডিয়াম কমিটির সম্পাদক অমল সরকার বলেন, “যে কোনও সুইমিং পুলের নূন্যতম আয়তন হওয়া উচিত ৩৫ মিটার। রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে গেলে ৫০ মিটার আয়তন থাকা দরকার। কিন্তু এই সুইমিং পুলটির আয়তন মাত্র ১৫ মিটার। ফলে এখানে আপাতত ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া ছাড়া কিছুই করা যাবে না। তবে এডিডিএ যদি আমাদের দায়িত্ব দেয় তাহলে আমরা বিষয়টি নিয়ে বিকল্প ভাবনা চিন্তা করতে পারব।”
এডিডিএ এর চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “খুব তাড়াতাড়ি সুইমিংপুলের দায়িত্ব স্টেডিয়াম কমিটিকে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।” |