প্রথম নির্দেশিকায় বলা ছিল, অর্থনীতির সঙ্গে পড়া যাবে সংস্কৃত, আরবি বা ফার্সির মধ্যে একটি। কিন্তু দ্বিতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী, অর্থনীতির সঙ্গে এর কোনওটি পড়া যাবে না।
একাদশ শ্রেণিতে কোন বিষয়ের সঙ্গে কোন বিষয় পড়া যাবে বা যাবে না, এই সংক্রান্ত দ্বিতীয় এই নির্দেশিকা ওয়েবসাইটে সময় মতো না দেখায় প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়ারা বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বেশ কিছু স্কুল। পরে জানতে পেরে বিষয় বদলে পরীক্ষার জন্য পড়ুয়ারা পড়াশোনার সময় কম পেয়েছেন বলে দাবি তাদের। যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে জানানো হয়েছে, এই বিষয়সূচি পরিবর্তনের কথা ওয়েবসাইট ছাড়া আরও নানা ভাবে জানানো হয়েছে। তা পড়ুয়ারা না জেনে থাকলে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির গাফিলতিই দায়ী বলে জানিয়েছেন সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস।
জেলার নানা স্কুলের দাবি, একাদশ শ্রেণির বিষয় তালিকা জানিয়ে মে মাসের শেষে তাদের ওয়েবসাইটে একটি নির্দেশিকা দেয় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তার দিন পনেরো পরে বিষয় তালিকায় কিছু পরিবর্তন করে ফের আর একটি নির্দেশিকা দেওয়া হয় ১০ জুন। একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছে জুনের শেষে। সংসদের ওয়েবসাইটে দ্বিতীয় যে নির্দেশিকা দেওয়া হয় তাতে আর্টস বিভাগের বিষয় তালিকায় কিছু পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু তার আগেই অনেকে পুরনো নির্দেশিকা অনুযায়ী বিষয় বেছে নেওয়ার পরে রেজিস্ট্রেশন পর্বও সারা হয়ে গিয়েছিল। কিছুদিন পরে সংসদ থেকে স্কুলে কয়েক জনের রেজিস্ট্রেশন রিভিউয়ের চিঠি আসে। তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পড়ুয়ারা বিষয়টি জানতে পারে। পড়ুয়ারা চেপে ধরে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়, বিষয়টি তাঁদের জানা ছিল না।
ওয়েবসাইটে দেওয়া দ্বিতীয় নির্দেশিকার কথা না জানার কারণেই এমন সমস্যা হয়েছে বলে পড়ুয়াদের জানান তাঁরা। প্রত্যন্ত এলাকার বহু স্কুল এখনও ইন্টারনেটে তত সড়গড় নয় বলেই দ্বিতীয় নির্দেশিকার কথা সময়ে জানতেই পারেনি বলে দাবি স্কুলগুলির। এর ফলে বিপাকে পড়েছে সেই সব স্কুলের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। প্রথম নির্দেশিকা অনুযায়ী পছন্দের বিষয় বেছে বই কিনে পড়াশোনা শুরু করলেও পরীক্ষার মাস তিনেক আগে তারা বিষয়সূচি বদলের কথা জানতে পেরেছে। ফলে, এখন এই অল্প সময়ে মধ্যে নতুন বিষয় বেছে বই কিনে পুরো সিলেবাসের পড়া তৈরি করতে হবে বলে জানিয়েছে তারা।
দুর্গাপুরের এমএএমসি মডার্ন হাইস্কুল, নেপালিপাড়া হিন্দি হাইস্কুল, ডিপিএল গার্লস, পাণ্ডবেশ্বরের শ্রী জয়পুরিয়া হাইস্কুল, কাঁকসার মলানদিঘি দুর্গাদাস হাইস্কুলে এ ধরনের সমস্যা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলগুলি ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচও আলাদা ভাবে পায় না। নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারের রেওয়াজ এখনও সেভাবে চালু না হওয়ার জেরেই এমন হয়েছে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস অবশ্য বিষয়টি স্কুলের গাফিলতি বলেই মনে করছেন। তিনি জানান, শুধু ইন্টারনেটে নির্দেশিকা নয়, এই বিষয় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত সূচি সংসদ পরিচিতি বা সিলেবাসের বই থেকেও জানা যায়। রিজিওনাল অফিস থেকে স্কুলগুলি সে সব নিয়মিত সংগ্রহ করলেই কোনও সমস্যা হতো না বলে মনে করছেন তিনি। |