সিপিএমকে ছাড় নয়, পাল্টা সভায় তৃণমূল
সিপিএমের পাল্টা সভা করার রেওয়াজ আবার ফিরিয়ে আনছে তৃণমূল।
দিন সাতেক আগে দমদমের দীপেন ঘোষ সরণিতে সভা করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসুরা শাসক দলের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। শনিবার সেখানেই পাল্টা সভা করে বুদ্ধবাবুদের তুলোধনা করলেন মুকুল রায়েরা। লোকসভা ভোটের আগে এ ভাবেই বিরোধী বামেদের মোকাবিলা করতে দলের ছাত্র, যুব ও ‘যুবা’ নেতাদেরই ব্যবহার করতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব। মুকুলবাবুই জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে পুরুলিয়ায় জনসভা করে তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূলের সমালোচনা করেছিলেন বুদ্ধবাবুরা। কয়েকদিনের মধ্যে সেখানেই বড়সড় সভা করে তার ‘যোগ্য জবাব’ মুকুলবাবুরা দিয়েছিলেন। এ বার শাসক দলে পরিণত হয়েও সেই একই পথে তাঁরা হাঁটা শুরু করলেন।
দমদমের সভায় এ দিন মুকুলবাবু থেকে শুরু করে রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী মদন মিত্র, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাধন পাণ্ডে তো বটেই লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল যুবার সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বুদ্ধবাবুদের বক্তব্য ধরে ধরে সমালোচনা করেন। আগামী ৩০ জানুয়ারি দলের ব্রিগেড সমাবেশের প্রচারকে সামনে রেখেই তৃণমূল নেতৃত্ব সিপিএমের পাল্টা সভা করেন দমদমে।

বজবজের চিলড্রেন্স পার্কের জনসভায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সঙ্গে শমীক লাহিড়ী। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
এ দিনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের চিলড্রেন্স পার্কের জনসভায় বুদ্ধবাবু রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ করেন। রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৃণমূল নষ্ট করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তাঁর কথায়, “রাজ্যে প্রতি দিন মানুষের উপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটছে। মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা নেই। মহিলারা নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন যখন-তখন। পাড়ায় পাড়ায় শাসক দলের তৈরি মোটরসাইকেল বাহিনীর দাপটে সাধারণ ও ভাল মানুষের কথা বলার অধিকার থাকছে না। শেষ কথা বলছে দুষ্কৃতীরা।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, রাজ্যের এই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে কোনও শিল্পই হবে না। বরং, কৃষি, শিল্প দু’ দিক দিয়েই রাজ্যের অবনতি হচ্ছে। রাজ্য সরকারের উন্নয়নের প্রচারকে কটাক্ষ করে বুদ্ধবাবু বলেন, “লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে উন্নয়নের প্রচার হচ্ছে! আমরাও সরকারে ছিলাম। জ্যোতিবাবু এবং আমার ছবি ছাপা হয়নি। সরকারের টাকায় এ সব করা যায় না।”
দমদমের সভায় বুদ্ধবাবুর বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে মদন, জ্যোতিপ্রিয়, সুদীপবাবুরা পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যে গণতন্ত্র আছে বলেই সাত দিন আগে বুদ্ধবাবুরা এখানে সভা করতে পেরেছেন। এলাকায় মিছিল করেছেন। দমদমে দুলাল-কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল নেতারা বলেন, “ওঁদের সময়ে দুষ্কৃতীদের মদত দেওয়া হত। দমদমে জোড়া খুনের অভিযুক্তদের দলের সম্পদ বলা হত।” এলাকার মানুষকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “সিপিএমের কিছু নেতার ইন্ধনে দুলালকে জেল থেকে বের করার চেষ্টা হচ্ছে। আপনারা সচেতন থাকবেন।”
এ ভাবেই এ দিন দক্ষিণ থেকে উত্তরে শাসক-বিরোধী সমাবেশে সরগরম ছিল। পাশাপাশি ব্রিগেডের সমাবেশের প্রচারে কলকাতার উত্তরে সিঁথি মোড় থেকে পার্ক সার্কাস বিশাল মিছিলও করেছে তৃণমূল। সুদীপবাবুর নেতৃত্বে সেই মিছিলের মাঝপথে সামিল হয়েছিলেন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে এ দিন কংগ্রেস, সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগদানের পর্বও অব্যাহত ছিল। তৃণমূল ভবনে এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার কংগ্রেস নেতা দেবী ঘোষাল দল ছেড়ে সদলবলে শাসক দলে যোগ দেন। দমদমের সভাতেও স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতা সদলবলে তৃণমূলে যোগ দেন। দলত্যাগের প্রেক্ষিতে মুকুলবাবুর দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সরকারের যে উন্নয়ন যজ্ঞ চলছে তা বিরোধী দলের অনেক নেতা-কর্মীই উপেক্ষা করতে পারছেন না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.