|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
রাক্ষসকাকু আমার ঠাকুমাকে ‘মা’ বলে ডাকত। ঠাকুমা ওকে ‘রাখু’ বলে ডাকত। রাখু ডাকনামটা রাক্ষসের আদরীকরণ নয়, রাক্ষসকাকুর পিতৃদত্ত নাম ছিল রাখাল। গঙ্গাস্নানে গিয়ে ঠাকুমা এক বার পিছলে পড়েছিল ঘাটে, ওই রাক্ষসকাকুই রিকশা করে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিল। সেই থেকেই ঠাকুমার সঙ্গে ওর ভাব, মা ডাকা, পুজোয় কাপড় দেওয়া এবং রাক্ষসগিরি করতে বাইরে যাওয়ার আগে প্রণাম করে যাওয়া।
ও নররাক্ষসের খেলা দেখাত। আমাদের পাড়ায় ঝুলনের মেলায় ত্রিপল-ঘেরা জায়গায় চার আনার টিকিট কেটে খেলা দেখা যেত। পাড়ার ফাংশনেও দু-এক বার দেখেছি। জ্যান্ত মুরগি কিংবা পায়রা টঁুটি টেনে ছিঁড়ে গলাটা মুখে পুরে দিয়ে রক্ত খেত, উন্মত্তের মতো পালক ছাড়াত, দেহটা টেনে ছিঁড়ে কাঁচা মাংস চিবিয়ে খেত, সারা মুখে রক্ত লেপটে যেত, সারা গায়ে ছেঁড়া পালক, হাঃ হাঃ অট্টহাসি...। আমাদের ভয় লাগত। মা-পিসিমারা অবাধ্য শিশুদের বলত ‘এক্ষুনি রাক্ষসকাকুকে ডেকে নিয়ে আসব।’
রাক্ষসকাকুর ছিল মাথায় ঝাঁকড়া চুল, গোল গোল চোখ। প্রায়শই লাল হয়ে থাকত। কাছেই একটা বস্তিতে একা থাকত, ওর বাবা-মা ছিল না। বছরের অনেকটা সময় কোনও ছোট সার্কাসের দলের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে নররাক্ষসের খেলা দেখাত। রক্ত-মাংস ছাড়াও আগুন খেত, কাচ এবং ব্লেডও খেয়ে নিত। পাড়ার চায়ের দোকানে কেউ অনুরোধ করলে আগুন খাওয়া দেখাত। জ্বলন্ত বিড়ি মুখের ভিতরে ঢুকিয়ে নিয়ে নাক দিয়ে ধোঁয়া বার করত, চিবোত, তার পর হাঁ-মুখ করে দেখিয়ে বলত ‘বিড়ি নেই’। একটু পরই মুখ ঘুরিয়ে বিড়িটাকে ঠোঁটে নিয়ে আসত, টানত। দেখতাম বিড়িতে আগুন জ্বলছে। এটা ম্যাজিক খেলা, কিন্তু জ্যান্ত মুরগি খাওয়াটা তো কোনও ভেলকি বা হাত-সাফাই বা মুখ-সাফাই নয়। সবাই তো দেখত ফিনকি বেরনো রক্ত, মৃত পাখির বিক্ষত শরীর। ও বলত, এই খেলা দেখানোর সময় আমি সত্যিকারের রাক্ষস হয়ে যাই, কী যেন আমার ওপর ভর করে।
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য। |
বাবা-কাকারা ঠাকুমাকে বলত, ওই রক্তখেকো রাক্ষসটাকে লাই দাও কেন? ঠাকুমা বলত, ও তো রক্তমাংসেরই মানুষ। আমাকে কোলে তুলে রিকশায় বসিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিল কে? এক দিন শুনেছিলাম, ঠাকুমা বলছেন, ‘রাখু, কত দিন এ ভাবে থাকবি? একটা বিয়ে কর এ বার।’ ‘রাক্ষসী পাব কোথায়? রাক্ষসী ছাড়া আমাকে বিয়ে করবে কে?’ রাক্ষসকাকু বলেছিল।
রাক্ষসকাকুকে বাজার করতে দেখেছি, চটের থলে থেকে উঁকি মারত লাউডগা, সজনে ডাঁটা। ঝাঁকড়া চুলে তেল মেখে পাট করে আঁচড়ে যখন গঙ্গার ধারে হরিসভায় বসে থাকত, কে বলবে এই লোকটাই কাঁচা মাংস খায়!
রাক্ষসকাকু জেলেপাড়া বস্তির যে ঘরটায় থাকত, তার উলটো দিকের ঘরে একটা মেয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিল। সে সময়ে অবিবাহিতা মেয়েরা গর্ভবতী হয়ে পড়লে অনেকেই গলায় দড়ি কিংবা গায়ে আগুন দিত। পোড়া গন্ধ পেয়ে রাক্ষসকাকু দরজা ভেঙে মেয়েটার গায়ে কম্বল চাপা দিয়েছিল, তার পর হাসপাতাল। মেয়েটা বেঁচে যায়।
এক দিন খুব শোরগোল। রাক্ষসকাকু এ বার পায়রা নয়, মুরগি নয়, জ্যান্ত মানুষের সঙ্গে নররাক্ষস খেলছে। একটা লোককে শুইয়ে, নখ দিয়ে আঁচড়ে রক্ত বার করে দিয়ে, সেই রক্ত গায়ে মাখছে, কামড়ে লোকটার হাত খুবলে নিয়েছে। অন্য লোকেরা অনেক চেষ্টা করে ওকে সরাতে পেরেছিল। রাক্ষসকাকু চেঁচাচ্ছিল জ্যান্ত খেয়ে নেব শালা, একটা মেয়েকে খেয়ে সাইকেল হাঁকাচ্ছিস? শালা রাক্ষস!
এই লোকটার জন্যই মেয়েটা গায়ে আগুন দিয়েছিল। ও মাছের ব্যাপারী। মেয়েটার বাবা বাজারের বাইরে মাছ বিক্রি করত। লোকটা লোভ দেখিয়েছিল, বাবাকে বাজারের ভিতরে মাছের দোকান লাগিয়ে দেবে। বিয়ে করার লোভও দেখিয়েছিল।
শুনেছিলাম, সালিশি হয়েছিল। অনেকে বলেছিল, লোকটাকে বাধ্য করা হোক, যেন মেয়েটাকে বিয়ে করে। রাক্ষসকাকু বলেছিল, কেন আর একটা সংসার নষ্ট হবে, লোকটা তো বিবাহিত। কী করা যায় আমি দেখছি।
রাক্ষসকাকুই বিয়ে করেছিল মুখপোড়া মেয়েটাকে। কালীঘাটে বিয়ে হল সকালে, বিকেলে খাওয়াদাওয়া। আমাদের নেমন্তন্ন ছিল। আমরা ভদ্রলোক কিনা, তাই বাবা-কাকারা যায়নি। ঠাকুমা ওদের বাড়িতে ডেকে খাইয়েছিলেন, শাড়ি দিয়েছিলেন। আমার ভাইবোনরা ফিসফাস করছিল রাক্ষসকাকুর বউ রাক্ষসীর মতোই হয়েছে, গাল-গলার চামড়া কালো, কুঁচকোনো, একটা চোখ বেরিয়ে পড়া। আমার ঠাকুমাকে প্রণাম করে বলেছিল মা, মানুষ সহজে রাক্ষস হয় না, তবে রাক্ষস মানুষ হতে চায়; এটাই নিয়ম। আরও বলেছিল, কিছু মানুষ আছে, যারা আমার মতো রাক্ষসের খেলা দেখায় না, নিজেরা মানুষের মতোই দেখতে, কিন্তু রাক্ষস তৈরি করে।
নররাক্ষসের খেলা ছেড়ে দিয়েছিল কাকু। শ্যামবাজারে একটা পান-বিড়ির দোকান দিয়েছিল। সেই দোকানটা আর নেই, মেট্রো রেলের স্টেশন হয়েছে। আমার ঠাকুমা-মা-বাবা কেউই বেঁচে নেই, কিন্তু ওর কথাটা বেঁচে আছে। এখনও শুনি, মনুষ্য আকৃতির জীব প্রকাশ্যে চিত্কার করে বলে হাতের কবজি কেটে নিন, ঘর জ্বালিয়ে দিন, বোম মারুন। |
|
|
৪৯.১
এ রাজ্যের যত শতাংশ মানুষ
কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের
(প্যাসিভ স্মোকিং) শিকার |
৪৭৯৬৫১
মাত্র ছ’মিনিটে যতগুলো
আতশবাজি পুড়িয়ে গিনেস বুক-এ
নাম তুলল দুবাই প্রশাসন |
১২২৩৬০
যত টাকা দাম ইন্ডিয়ান অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি
নির্মিত রিভলভার ‘নির্ভীক’-এর। মূলত
ভারতীয় মহিলাদের ব্যবহারের কথা ভেবে
বিশেষ ভাবে নির্মিত এই আগ্নেয়াস্ত্র, ওজন ৫০০ গ্রাম
|
৩৬
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ান-ডে ম্যাচে যত বলে
সেঞ্চুরি করে শহিদ আফ্রিদির রেকর্ড ভাঙলেন
নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান কোরি অ্যান্ডারসন
|
২৭৮৭৭৭২
রাজ্যে এ বার নতুন ভোটার
যত জন বেড়েছে। গত বছরের
ভোটার তালিকার নিরিখে নতুন
ভোটার বেড়েছে ৪.৬% |
১৮৭৭৬
যত পয়েন্ট নিয়ে বিশ্ব ব্যাডমিন্টন
ফেডারেশন প্রকাশিত জুনিয়র
র্যাঙ্কিং তালিকার শীর্ষে
ভারতের আদিত্য জোশী |
৩৬০০০০০০০
গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে
এ বছর যত টাকা খরচ
করেছে রাজ্য সরকার |
৪
কনভয়ে গাড়ির সংখ্যা কমিয়ে
যত করলেন উত্তরপ্রদেশে
মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব।
আগে থাকত ১৬-২০টি গাড়ি |
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
থাপ্পড়ে তার নাক ভেঙেছে, রডের ঘায়ে মাথা।
কোনও ক্রমে অটোয় চাপে ভয়ার্ত কলকাতা।
ভাড়ার হিসেব? আকাশ ছোঁয়া। মন্ত্রী জানেন সবটা।
বাস নেই তাই চিন্তা তোদের? এই নে হেলিকপ্টার! |
বাপের মতন দাদার মতন... কেউ বা ছোট ভাই
মাথার ওপর মোড়ল আছেন, চিন্তা কিছু নাই
আনতে আমায় উচিত পথে
খুবলে খাবেন মস্তি-মতে
বানিয়ে দেবেন এই বাংলার মুখতারন মাই! |
|
|
|
|
|
|
|
|