প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হল মহানগরীকে। রেড রোড-সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন করা হল অতিরিক্ত বাহিনী। সম্প্রতি খিদিরপুর ধর্ষণ-কাণ্ড এবং অন্যান্য ঘটনার প্রেক্ষিতে মহিলাদের সুরক্ষার উপরেও জোর বাড়ানো হয়েছে। রাতে সদলবল নিরাপত্তা খতিয়ে দেখলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি বছরের মতো এ বারও সকাল দশটায় রেড রোডে কুচকাওয়াজ শুরু হবে। তাতে থাকবেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সেনা-পুলিশ-প্রশাসনের উচ্চকর্তারা। |
সেনা সূত্রের খবর, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী এবং কলকাতা-রাজ্য পুলিশের কর্মীরা কুচকাওয়াজ করবেন। থাকবে এনসিসি ও স্কুলপড়ুয়ারাও। তবে প্রাথমিক ভাবে যে সময় নির্ধারিত হয়েছিল, রাজ্য সরকারের অনুরোধে তা কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। এ বার বিশেষ আকর্ষণ থাকছে নৌবাহিনীর কুচকাওয়াজ। রাজ্যে এ বারই প্রথম সাবমেরিনের মডেল ট্যাবলো ব্যবহার করবে তারা।
আজ, রবিবার রেড রোডের এই কুচকাওয়াজের জন্য ভোরবেলা থেকেই ওই এলাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হবে। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, কুচকাওয়াজ শেষ হলে তবে সেখানে স্বাভাবিক হবে যান চলাচল। এ দিন সকাল দশটা থেকে পনেরো মিনিটের ব্যবধানে চলবে মেট্রো।
লালবাজার সূত্রের খবর, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের জন্য বৃহস্পতিবার থেকেই রেড রোডে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। সে দিনও ওই এলাকায় পরিদর্শন করেছিলেন পুলিশ কমিশনার-সহ পদস্থ কর্তারা। সে দিন থেকেই শহরের প্রতিটি থানাকে রাতে বিশেষ তল্লাশি চালাতে বলা হয়েছিল। জোর দেওয়া হয়েছে গাড়ি তল্লাশির উপরে। রাস্তায় পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলির উপরেও নজর বাড়াতে বলা হয়েছে। প্রতিটি গাড়ি সম্পর্কে তথ্য রাখতেও নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষ কর্তারা।
কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, অপরাধী কিংবা জঙ্গিরা যাতে শহরের হোটেল-অতিথিশালাগুলিতে ঘাঁটি গাড়তে না পারে, তার দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের পাশাপাশি থানার কর্মী-অফিসারেরাও নিজেদের এলাকার হোটেলগুলিতে তল্লাশি চালাচ্ছেন। প্রয়োজনে পরিচয়পত্রও পরীক্ষা করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত দিন দুয়েক ধরে রাতের দিকে রাস্তায় গার্ড রেল বসিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সন্দেহভাজন মনে হলে, গাড়ি দাঁড় করিয়ে বিশদে তল্লাশি চালিয়েছেন অফিসারেরা। শিয়ালদহ স্টেশন এলাকাতেও অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ওই এলাকায় রাতে অবাঞ্ছিত লোকজন যাতে থাকতে পারে, তার উপরেও জোর দিতে বলেছেন লালবাজারের কর্তারা। মেট্রো স্টেশন, বাস টার্মিনাসের উপরেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
পুলিশ বলছে, রবিবার ছুটির দিনে ভিড় জমতে পারে চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া, গঙ্গার ঘাটেও। সম্প্রতি ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই জায়গাগুলিতেও নজরদারি বাড়াচ্ছে লালবাজার। |