পোলিও মুক্ত ভারত গড়তে সব শিশুকে পালস্ পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় আনার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু গত রবিবারের পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচির পর সপ্তাহ শেষ হতে চলল। পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৫ হাজারেরও বেশি সংখ্যক শিশুকে এখনও পোলিও টিকা দেওয়া যায়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, এ বার সবমিলিয়ে ৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৩৬ জন শিশুকে এই কর্মসূচির মধ্যে নিয়ে আসার কথা ছিল। তবে, ওই দিনে ৪ লক্ষ ৭৪ হাজার ৩৩০ জন শিশুকে এই কর্মসূচির মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। পরের দু’দিন অর্থাৎ সোমবার ও মঙ্গলবার আরও ৫৩ হাজার ২৭৯ জন শিশুকে পোলিও টিকা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ওই দিন পর্যন্ত এই কর্মসূচির বাইরে থেকে গিয়েছে ২৫ হাজার ৩২৭ জন শিশু। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য আশ্বাস, স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। কার পোলিও টিকাকরণ হয়েছে, কার হয়নি, তা দেখছেন। শীঘ্রই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “কিছু শিশুকে এখনও পোলিও টিকা দেওয়া যায়নি। তার পিছনে নানা কারণ রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। আগামী সোমবার পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।”
সব শিশুকে পালস্ পোলিও কর্মসূচির মধ্যে আনা সম্ভব না হওয়ার কারণ কী? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রের দাবি, বাড়ি বাড়ি খোঁজ করে জানা গিয়েছে, একাংশ শিশু এলাকার বাইরে রয়েছে। অন্য দিকে, কিছু এলাকায় এখনও তেমনভাবে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। ওই সব এলাকার কয়েকজন মা তাদের শিশুকে পোলিও টিকা দিতে চাইছেন না। পরিস্থিতি বুঝে আগে থেকেই ওই সব এলাকায় পালস্ পোলিও নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কয়েকটি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলেও এখনও সকলের মধ্যে সমান সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। পোলিও কর্মসূচির জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার ২ হাজার ৫৭৫টি কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। সবমিলিয়ে ১০ হাজার ৩০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হন। এ ছাড়াও ছিলেন ৮৯৮ জন সুপারভাইজার।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, এরমধ্যে রয়েছে গড়বেতা ১, শালবনি, কেশপুর, দাসপুর ১, বিনপুর ১ (লালগড়) ব্লকে অনেক শিশু এখনও পোলিও কর্মসূচির বাইরে রয়ে গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৯টি ব্লকের মধ্যে গড়বেতা ৩, মেদিনীপুর সদর, চন্দ্রকোনা ২, ঘাটাল, ডেবরা, সবং, খড়্গপুর ২, কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়, দাঁতন ১, মোহনপুর, নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল, গোপীবল্লভপুর ২, ঝাড়গ্রাম, বিনপুর ২ (বেলপাহাড়ি) ব্লকে এই কর্মসূচি সফল হয়েছে। শহর এলাকার মধ্যে একটু পিছিয়ে ঝাড়গ্রাম। ঝাড়গ্রাম শহরের ৫ হাজার ৪৫২ জন শিশুকে এই কর্মসূচির মধ্যে নিয়ে আসার কথা ছিল। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪ হাজার ৯১২ জন শিশুকে এই কর্মসূচির মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। |