|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
রবীন্দ্র চর্চা এবং কাণ্ডজ্ঞান |
বইপোকা |
রবীন্দ্রনাথ যে বিশ্বমনা তাহার প্রমাণ কী? ১৯২৭ সালে এশিয়ার দ্বীপপুঞ্জগুলিতে ভ্রমণের সময় রবীন্দ্র-ভাষাচার্য সুনীতিকুমারকে বলিদ্বীপের প্রধান ডচ্ রাজপুরুষ শ্রীযুক্ত কারণ বলেছিলেন— “রবীন্দ্রনাথ কেবল আপনাদের দেশের নহে, উনি সমগ্র মানবজাতির।” ভাগ্যিস বলিয়াছিলেন, নহিলে বিশ্বমনা ঠাকুর তোমায় কে চিনত! অরবিন্দ দাস সংকলিত বিনি সুতোর মালা (গাঙচিল) গ্রন্থে একটি পরিচ্ছেদের নাম ‘বিশ্বমনা রবীন্দ্রনাথ’। তাহাতে এই একটি তথ্যই সংকলিত! বিবিধ সূত্র হইতে তথ্য সংকলন করিয়া সে সকলকে বিষয়ানুসারে সাজাইয়া রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে একটি হ্যান্ডবুক গোছের নির্মাণ করিবার প্রয়াস এই গ্রন্থটি। গ্রন্থনির্মাণে কাণ্ডজ্ঞান লাগে বটে, কিন্তু তদপেক্ষা ওই জ্ঞানটির অধিক দরকার ঘটে রবীন্দ্রচর্চায়। সেটি কি ক্রমেই অন্তর্হিত হইতেছে গ্রন্থকার হইবার তাগিদে? আর একটি নমুনা দেখাই। প্রকাশ দাস বিশ্বাসের রবীন্দ্রনাথ ও মুর্শিদাবাদ (ছাপাখানার গলি, পরিবেশক পুস্তক বিপণি)। গ্রন্থকার লিখিতেছেন, ‘এ জেলা রবীন্দ্রনাথের কর্মভূমি শান্তিনিকেতনের এত কাছে হলেও এ জেলার সঙ্গে তাঁর তেমন আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি।’ তবে আর এই গ্রন্থ রচনা কেন? অবশ্য লেখকের যুক্তি আছে। নিদারুণ যুক্তি, মুর্শিদাবাদের সহিত সম্পর্ক না-ই বা গড়িয়া উঠিল, ‘মুর্শিদাবাদী ব্যক্তিত্ব’-এর সহিত সম্পর্ক ত গড়িয়াছিল! অতএব চর্বিতচর্বণ তথ্য জড়ো করিয়া রবীন্দ্রনাথ ও রামেন্দ্রসুন্দর, রবীন্দ্রনাথ ও রাধাকমল মুখোপাধ্যায় জাতীয় গো-রচনা শুরু হইল। হায়, মুর্শিদাবাদি সিল্ক, কি ছানাবড়ার ন্যায় মুর্শিদাবাদি ব্যক্তিত্বও তবে শুনিতে হইল কাণ্ডজ্ঞানহীন রবীন্দ্রচর্চায়! |
|
|
|
|
|