কেন্দ্র দূষণ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতেই নতুন লগ্নির দরজা খুলতে চলেছে হলদিয়ায়। ওই অঞ্চলে নিজেদের সার কারখানা সম্প্রসারণে ৪০ কোটি টাকা ঢালতে আগ্রহ দেখিয়েছে টাটা কেমিক্যালস। শুরু করেছে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াও।
শিল্পমহলের মতে, নিখাদ টাকার অঙ্কে এই লগ্নি হয়তো তেমন নজরকাড়া নয়। কিন্তু দু’দিক থেকে তা তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞার জেরে এই শিল্পাঞ্চলে বেশ কিছু দিন বিনিয়োগ আসা বন্ধ ছিল। এ বার টাটা কেমের পর অন্যান্য সংস্থাও সেখানে টাকা ঢালার কথা ভাববে।
দ্বিতীয়ত, এই সারের উৎপাদন বাড়লে, কৃষি ক্ষেত্রও তার সুফল কুড়োতে পারবে বলে মনে করছে তারা।
হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের কাছ থেকে ২০০৪-এ কারখানাটি কিনেছিল টাটা কেম। সেখানে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি এক ধরনের সারও (সিঙ্গল সুপার ফসফেট বা এসএসপি) তৈরি করে তারা। বছর তিনেক আগে ১২ কোটি টাকা ঢেলে ওই সার তৈরির ব্যবস্থা এক দফা সম্প্রসারণও করেছিল সংস্থাটি। একই সঙ্গে ঠিক হয়েছিল, উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে লগ্নি করা হবে আরও ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু দূষণ নিয়ে কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞার জটিলতায় সেই প্রস্তাব আটকে যায়।
মাত্রাতিরিক্ত দূষণের অভিযোগে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে পরিবেশ মন্ত্রক এ রাজ্যের হলদিয়া, আসানসোল ও হাওড়া-সহ দেশের বেশ কিছু শিল্পাঞ্চলে নতুন লগ্নির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কেন্দ্রের কাছে তা প্রত্যাহারের আর্জি জানায় পূর্বতন বাম ও বর্তমান তৃণমূল সরকার। সম্প্রতি দূষণ-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর ১০ শিল্পাঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন পরিবেশ মন্ত্রী বীরপ্পা মইলি। যার মধ্যে আছে হলদিয়াও।
শুক্রবার সংস্থার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর পি কে ঘোষ জানান, ৪০ কোটি লগ্নির পুরনো পরিকল্পনা রূপায়িত করতে চান তাঁরা। সংস্থা সূত্রে খবর, এখানে বছরে ২ লক্ষ টন এসএসপি তৈরি হয়। সম্প্রসারণের পর তা বাড়বে দ্বিগুণেরও বেশি। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, গরিব মানুষের সার হিসেবে পরিচিত এই এসএসপি-র গুরুত্ব চাষে অনেকখানি।
পি কে ঘোষ জানান, আগামী দিনে ভোগ্যপণ্য ও কৃষিপণ্যের ব্যবসাকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। সেই সূত্রেই বাজারে এনেছেন জল শোধনের যন্ত্র ‘টাটা সচসিলভার আর ও’। |