তৃণমূলের ব্রিগেডের আগেই জনসভা সূর্যের
পাঁচ বছর যেখানে পার্টি অফিস খোলা যায়নি, এ বার সেখানেই সূর্যকান্ত মিশ্রকে দিয়ে জনসভা করিয়ে হতোদ্যম কর্মীদের মনের আঁধার ঘোচাতে চাইছে সিপিএম।
গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই কেতুগ্রাম ১ ব্লকের দুটি লোকাল কমিটি অফিস কার্যত বন্ধ। কান্দরা এলাকায় সিপিএমের পা পড়েনি বললেই চলে। গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারে গিয়ে সিপিএম প্রার্থী মার খান। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীই দিতে পারেনি সিপিএম তথা বামফ্রন্ট।
আগামী ৩০ জানুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ। ঠিক তার আগের দিন, ২৯ তারিখ কান্দরায় সূর্যকান্ত মিশ্রকে দিয়ে জনসভা করানোর পরিকল্পনা করেছে সিপিএম। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশের প্রচারও এখান থেকেই করা হবে। সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “কেতুগ্রামের লাগোয়া বীরভূমের নানুর বা মুর্শিদাবাদের সালার থেকেও প্রচুর মানুষ ওই সভায় আসবেন। দীর্ঘসময় মানুষ আমাদের কথা শুনতে পায়নি। এই সভার মধ্যে দিয়ে মানুষ আমাদের কথা ফের শুনতে পাবেন।”
বিধানসভা ভোটের পর থেকে কেতুগ্রাম ১ উত্তর লোকাল সম্পাদক আনসারুল হক কাটোয়ায় এবং কেতুগ্রাম ১ দক্ষিণ লোকাল সম্পাদক তপন কাজি সালারে থাকছেন। কেতুগ্রাম ১ ব্লকের অধিকাংশ সিপিএম নেতাই আপাতত পাকাপাকি ভাবে কাটোয়ায়। সিপিএম সূত্রের খবর, সূর্যবাবুর জনসভাকে সামনে রেখে দলীয় দফতরগুলি ফের খোলার চেষ্টা হবে।
সূর্যকান্ত মিশ্র। —ফাইল চিত্র।
কান্দরায় জনসভা করতে চাওয়া হয়েছিল ২৮ জানুয়ারি। কিন্তু সে দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত সব কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন থাকায় পরের দিন সভা করতে বলে প্রশাসন। অমলবাবুরা তা মেলে নিয়েছেন।
তবে শুধু কেতুগ্রাম নয়, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু জানুয়ারির শেষে মেমারি এবং রায়নাতেও সভা করবেন বলে সিপিএম সূত্রের খবর। জামালপুরে দু’টি সভা করবেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম। কয়েক মাস আগে মেমারি শহরে মিছিলে তৃণমূলের হামলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন দলের নেত্রী রানি কোঙার, প্রাক্তন বিধায়ক সন্ধ্যা চট্টোপাধ্যায়রা। রায়না ও জামালপুরেও শাসকদলের বিরুদ্ধে বারবার সন্তারাসের অভিযোগ তুলেছে প্রাক্তন শাসকদল। দলের রায়না জোনাল সম্পাদক আকতার আলির অভিযোগ, “পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে এখানে তিনটি দলীয় দফতরের তালা খুলতে পারিনি।” ওই সব অফিসও ফের খোলার চেষ্টা হবে।
সিপিএম সূত্রের খবর, জেলায় সূর্যবাবুর তিনটি সভারই দায়িত্বে রয়েছেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অচিন্ত্য মল্লিক। তাঁর দাবি, “আমাদের আশা, সভাগুলিতে ভিড় হবে। যে সব কর্মী-সমর্থক এই সন্ত্রাসের আবহাওয়াতেও ঘর থেকে বাইরে আসবেন, তাঁরা আর ঘরমুখো হবেন না।” যে সব কর্মী বা সদস্য তৃণমূলের ভয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন, তাঁদের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর কথা গত ৫ জানুয়ারি জেলা কমিটিতেও উঠেছে। দলের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, “কান্দরার সভা সফল হলে নানুরের সিপিএম কর্মী-সমর্থকরোও উৎসাহ পাবেন। তৃণমূলের সন্ত্রাসে কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও নানুর পিঠোপিঠি। এক জায়গার সংগঠন চাঙ্গা হলে, অন্য জায়গাতেও সংগঠন জেগে উঠতে বাধ্য।” সভা করার জন্য এই সময়টাকেই বেছে নেওয়ার কারণ কী?
এক, ব্রিগেডের প্রচার। দুই, এই জনসভাকে সামনে রেখে ছোট-ছোট সভা করে জনসংযোগ ঝালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্যের দাবি, “কেতুগ্রাম থেকে রায়না, সব জায়গাতেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে। একটা বড় অংশ চাইছে, আমরা যেন ফের ময়দানে নেমে আন্দোলন করি। আমাদের মনে হয়েছে, জনসভা করা এবং দলীয় দফতর খোলার জন্য এটাই সবচেয়ে ভাল সময়।”
কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের প্রতিক্রিয়া, “ওদের পার্টি অফিস নেই, লোকজনও নেই। আচমকা বড় নেতাকে দিয়ে সভা করিয়ে ওরা আসলে এই এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইছে বলেই আমার ধারণা।” রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথের টিপ্পনী, “সিপিএমের কথা তো মানুষ সব জায়গাতেই শুনছেন। কিন্তু মানুষ ওদের কথা বিশ্বাস করছেন না, এটা প্রমাণিত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.