ভাঙাচোরা জেটি ঘাট দিয়ে লঞ্চ কিংবা ভুটভুটিতে ওঠা-নামার সমস্যায় জেরবার সুন্দরবনের পাখিরালয়ে বেড়াতে আসা পর্যটক থেকে স্থানীয় মানুষ। অভিযোগ, পাখিরালয়ের ওই জেটি তৈরি হওয়ার পরে দীর্ঘ দিন তার কোনওরকম সংস্কার হয়নি। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও লাভ হয়নি। ফলে যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই জেটি দিয়ে যাতায়াত চলছে।
পাখিরালয়ের অন্য পারে সজনেখালি। গোসাবা থেকে অনেক পর্যটকই সড়কপথে পাখিরালয় হয়ে সজনেখালি বেড়াতে যান। পাখিরালয়ে অনেক লজ ও হোটেল থাকায় সুন্দরবন বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকেই সেখানে রাত্রিবাস করেন। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্রে ভাঙা জেটির কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থেকে ১০ জনের একটি পর্যটক দল সুন্দরবনে ঘুরতে আসেন। সজনেখালি ঘুরে ভুটভুটি করে নদী পেরিয়ে পাখিরালয়ে আসেন তাঁরা। কিন্তু ভুটভুটি থেকে নামতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। ওই পর্যটক দলের এক সদস্য মীরা চৌধুরী বলেন, “ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে এসেছিলাম। |
কিন্তু এখানে এসে অন্য অভিজ্ঞতা হল। পর্যটকদের জন্য ন্যূনতম পরিষেবাগুলির দিকে নজরই নেই প্রশাসনের। না হলে ভেঙে পড়া বিপজ্জনক জেটির সংস্কার হয় না কেন?” তা ছাড়া পানীয় জল, ঘাটে পর্যাপ্ত আলো, শৌচালয়ের অভাব রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা জেটি দিয়ে যাত্রীদের ওঠানামা করতে হচ্ছে। অনেকে পড়েও যাচ্ছেন।
ক্যানিং মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্যটক ও স্থানীয় মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে মহকুমার বিভিন্ন নদীতে ৪০টিরও বেশি জেটিঘাট তৈরি করেছিল সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাসন্তীর সোনাখালি, ঝড়খালির জেটিঘাটগুলির অবস্থাও করুণ। কোথাও কংক্রিটের স্ল্যাব খুলে বেরিয়ে গিয়েছে। কোথাও বা জেটিঘাটের গায়ে বড় বড় ফাটল। লঞ্চ বা ভুটভুটি এসে জেটিতে লাগলে গোটা জেটিটাই কেঁপে ওঠে। মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “জেটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি।” সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “পাখিরালয়ের ওই জেটি সারানোর জন্য দফতরের বাস্তুকারদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ছাড়া পর্যটকদের কথা ভেবে আমরা সুন্দরবনে আরও কিছু নতুন জেটি তৈরি করা হচ্ছে।” |