অলিম্পিকে যেতে চাই, শহরে ফিরে জানালেন ঐশ্বর্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
জাতীয় জুনিয়র টেবল টেনিসে সদ্য চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরা ঐশ্বর্য দেবের ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছেন মান্তু ঘোষ। মঙ্গলবার গুয়াহাটি থেকে শহরে ফিরতেই তাঁকে নিয়ে মেতে ওঠেন নর্থ বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা থেকে পাড়ার চেনা পরিচিতরা। মান্তু এ দিন বলেন, “ঐশ্বর্যের খেলার ধরণটা অন্যদের থেকে একটু আলাদা। ও সব সময় নিখুঁত করে খেলার চেষ্টা করে। ও যদি নিজেকে ঠিকভাবে ধরে রাখতে পারে তাহলে একদিন দেশের টেবিল টেনিসকে শাসন করতে পারবে।”
কোচের প্রশংসা পেয়ে খুশি ঐশ্বর্যও। এ বারই তাঁর প্রথম জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আগে জুনিয়র বিভাগে একাধিকবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে তাঁকে। ক্যাডেট বিভাগেও এক বার ফাইনালে উঠে তাঁকে হারতে হয়েছিল। জাতীয় চ্যাম্পিয়ন না হতে পারার আক্ষেপটা তাই ছিলই। এ বার গুয়াহাটিতে জুনিয়র বিভাগে সেরা হয়ে তাই নিজের প্রতি বিশ্বাসটা ফিরে পেয়েছেন ঐশ্বর্য। আর সেটা ধরে রাখতে পারলেই ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য মিলবে বলেই মনে করছেন মান্তু। ঐশ্বর্য বললেন, “চলতি মরসুমের আমার পারফরম্যান্স ভাল ছিল না। এই জয়ের ফলে আত্মবিশ্বাস পেলাম। এ বার লক্ষ্য সিনিয়র বিভাগে খেতাব জয়। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য অলিম্পিকে যোগ দেওয়া।” |
|
বাড়ি ফিরে ঐশ্বর্য। —নিজস্ব চিত্র। |
ঐশ্বর্যের সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। মুখ্যমন্ত্রীর সফরে ব্যস্ত থাকায় তিনি পরে ঐশ্বর্যের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানান। এ দিন সকালে ঐশ্বর্যের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি লাল গোলাপ দিয়ে অভিনন্দন জানান। ভবিষ্যতে ফের এমন সাফল্য পেতে আশা প্রকাশ করেন।
এ দিন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির হন ইয়ং মেন অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াইএমএ)-এর কর্মকর্তারা। ওই ক্লাবেই খেলেন ঐশ্বর্য। হাজির ছিলেন ঐশ্বর্যের বাবা, মা-ও। এ বছর ব্যক্তিগত বিভাগে সেরা হওয়া ছাড়াও ডাবলসে সাগরিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। দলগত বিভাগে ঐশ্বযের্রা রানার্স-ও হয়েছেন। যুব বিভাগে ডাবলসেও তারা রুপো এনেছেন। ঐশ্বর্যর কাছে ফাইনালে হেরে সাগরিকা একটি রুপো এনেছেন। নর্থ বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা সুব্রত রায় বলেন, “মহিলা বিভাগে সম্প্রতি দেশের সেরা অঙ্কিতা দাস এবং ঐশ্বর্যকে একই সঙ্গে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা আমরা ভেবেছি। খুব শীঘ্রই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের কথা জানানো হবে।” অঙ্কিতা, ঐশ্বর্যদের সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষও।
ঐশ্বর্য জানান, ২০১২ সালে তাঁর কব্জির লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছিল। তার পর থেকেই খেলায় অনেকটা ছন্দপতন ঘটে। বাবা পেশায় শিলিগুড়ির সূর্যসেন মহাবিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিকাশবাবু ও মা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা স্বাতীদেবী দু’জনেই মেয়েকে উৎসাহ দিয়েছেন। তবু সাফল্য না মেলায় তাঁরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন মেয়ের টেবল টেনিসের ভবিষ্যত নিয়ে। এ বারের সাফল্য তাদের দুশ্চিন্তা দূর করেছে। কোচ মান্তু হাল ছাড়েননি। বারবার উৎসাহ দিয়েছেন। মান্তু জানান, অতীতের টেবল টেনিস তারকা ইন্দু পুরী যেমন টানা জেতার ক্ষমতা রাখত ঐশ্বর্যের মধ্যে সেই গুণ রয়েছে। সেই দিকেই এখন তাকিয়ে থাকবে উত্তরবঙ্গের টেবল টেনিস মহল। |
পুরনো খবর: অঙ্কিতার পর ঐশ্বর্য, টিটিতে ফের সোনা দিল শিলিগুড়িই |
|