|
|
|
|
কর আদায়ে দিনে অন্তত ২০টি বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ পুরসভার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কর আদায়ে প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে আদায়কারী রয়েছেন (ট্যাক্স কালেক্টর)। কিন্তু তাঁরা দিনে ৩-৪টি বাড়িতে গিয়েই দায় সারেন বলে অভিযোগ। বাড়ির মালিক কর দিলে নেন, না দিলে ফিরে আসেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুর-কর্তৃপক্ষের নির্দেশ, কর আদায়কারীদের দিনে অন্তত ২০টি বাড়িতে যেতে হবে। সেই সব বাড়ির মালিকের নাম, ফোন নম্বর লিখে আনতে হবে। প্রয়োজনে ফোনে যোগাযোগ করে পুর-কর্তৃপক্ষ যাচাই করবেন, আদায়কারী আদৌ গিয়েছিলেন কি না।
মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “কর আদায়কারীদের দিনে অন্তত ২০টি বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ঠিকঠাক কাজ করছেন কি না, তাও দেখা হবে।”
মেদিনীপুর পুরসভার আর্থিক পরিস্থিতি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে নেই। কর আদায়ের পরিমাণ কমলে সমস্যা হয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই পুর-কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। জানা গিয়েছে, সোমবার কর আদায়কারীদের নিয়ে পুরসভায় এক বৈঠক হয়। যেখানে ২৫টি ওয়ার্ডের ২৫ জন কর আদায়কারী-সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন পুরপ্রধান প্রণব বসু, উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস প্রমুখ। পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুর। স্বাভাবিক ভাবেই এই শহরের চেহারা দ্রুত বদলে যাচ্ছে। আশপাশে নতুন বসতি গড়ে উঠছে। শহরে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু, সময়মতো সব পুর-পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ। পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, একাংশ শহরবাসী সময়মতো কর দেন না। ঠিকঠাক পরিষেবা পেতে হলে সময়মতো কর মিটিয়ে দেওয়া দরকার। অর্থাভাবে অনেক কাজ এগোনো যায় না। সমস্যা হয়।
পুরসভার এক সূত্রে খবর, হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ পুরসভার বছরে ৪ কোটিরও বেশি টাকা আয় হওয়ার কথা। অর্থাৎ, মাসে ৩৪ লক্ষেরও বেশি টাকা। কিন্তু, ধার্য কর সময়মতো আদায় হয় না। ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি কর দীর্ঘদিন বকেয়া রয়েছে। বাড়ি মালিকদের বারবার বলেও বকেয়া কর আদায় করা যায়নি। কমবেশি সব ওয়ার্ডেই এই সমস্যা রয়েছে। পুরসভার এক সূত্রে খবর, কর বাবদ মাসে পুরসভার কোষাগারে যে পরিমাণ অর্থ আসে, প্রায় তার সবটাই খরচ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ বিল মেটানো, অস্থায়ী কর্মচারীর একাংশের বেতন, টেলিফোন বিল মেটানো-সহ বিভিন্ন খাতে এই অর্থ ব্যয় হয়। জানা গিয়েছে, ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ পুরসভার আয় হয়েছিল ৪১ লক্ষ ৫ হাজার ২৩৮ টাকা। পরের তিন মাসে আয় ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬৫৬ টাকা। অর্থাৎ, প্রথম ছ’মাসে আয় হয় ৫২ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৯৫ টাকা। সেখানে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ পুরসভার আয় হয়েছে ৪০ লক্ষ ৭৩ হাজার ৭২৫ টাকা। আর পরের তিন মাসে আয় ২৬ লক্ষ ৩৩ হাজার ১৩৩ টাকা। প্রথম ছ’মাসে মোট আয় হয়েছে ৬৭ লক্ষ ৬ হাজার ৮৫৮ টাকা। গত আর্থিক বছরের তুলনায় প্রথম ছ’মাসে এ বার ১৪ লক্ষ ৬৪ হাজার ৯৬৩ টাকা বেশিই আয় হয়েছে। তবুও উদ্বেগ কাটছে না পুর- কর্তৃপক্ষের। মাথাব্যথা সেই বকেয়া কর। নতুন পুরবোর্ড তাই গোড়া থেকে কর আদায়ে জোর দিচ্ছে। নতুন পুরবোর্ডের আমলে সোমবারই প্রথম কর আদায়কারীদের নিয়ে পুরসভায় বৈঠক হয়। আলোচনায় বিভিন্ন দিক উঠে আসে। জানা গিয়েছে, আদায়কারীদের সপ্তাহে অন্তত ২০টি দোকানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেখতে বলা হয়েছে, দোকানগুলোর ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে কি না। না থাকলে দোকান মালিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। |
|
|
 |
|
|