মুক্ত দুই মিজো, দীপের মুক্তি নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা

২১ জানুয়ারি
প্রায় দু’মাস পরে মিজোরামের মামিত জেলা থেকে অপহৃত দুই স্থানীয় গাড়ি চালককে মুক্তি দিল জঙ্গিরা। তবে একই সঙ্গে অপহৃত বাঙালি টেলিকম কর্মী দীপ মণ্ডল এখনও মুক্তি পাননি। বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের দিবাকরবাটি গ্রামে দীপের পরিবার তাঁর মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছেন।
মামিত জেলার এসপি রোডিংলিয়ানা চাওংথু বলেন, “গত কাল বিকেলে মিজোরাম ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জঙ্গলে এনএলএফটি জঙ্গিরা দুই অপহৃত গাড়ি চালক, সাংলিয়ানথাংগা ও লালজামলিয়ানাকে ছেড়ে দিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে আজ সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁদের দু’জনকে সিলসুরি গ্রামে আনা হয়। সিলসুরি থেকে তাঁরা গাড়িতে আজ সন্ধ্যায় মামিত পৌছেছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিশদ জানার চেষ্টা হচ্ছে। অপহৃত দীপ মণ্ডলের মুক্তির ব্যাপারেও আমরা আশাবাদী।”
মুক্তির পর মিজোরাম পুলিশের সঙ্গে দু’জন। —নিজস্ব চিত্র।
গত ২৩ নভেম্বর, দীপ মণ্ডল, তাঁর ট্যাক্সিচালক সাংলিয়ানথাংগা ও সঙ্গে থাকা ট্রাকচালক লালজামলিয়ানাকে মামিতের ডাম্পারেংপুই গ্রাম থেকে অপহরণ করেছিল ব্রু বা রিয়াং জঙ্গিরা। দীপ তখন ওই এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসাবার ব্যাপারে সমীক্ষা চালাচ্ছিলেন। পরে তাঁদের এনএলএফটির হাতে তুলে দেওয়া হয়। নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশে। এরপর দুই দেশের পুলিশ, সিআইডি, সীমান্ত রক্ষীরা নাগাড়ে তিনজনের সন্ধান চালাচ্ছিল। তিন অপহৃতকে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে মিজোরামে চলছে ধারাবাহিক আন্দোলন, পদযাত্রা। গত কাল মিজো ছাত্র সংস্থা নিজেরাই জঙ্গলে ও ব্রু অধ্যূষিত এলাকায় অপহৃতদের সন্ধানে অভিযান চালাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অপহরণকারীরা তিনজনের মুক্তির বিনিময়ে ৫ কোটি টাকা দাবি করে। কিন্তু এসপির দাবি, কোনও মুক্তিপণ না দিয়েই দুই চালককে মুক্ত করা গিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর লালজিরলিয়ানা অপহরণ ও উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে এদিন আইজলে সর্বদলীয় ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক ডাকেন। সেখানে তিনি বলেন, “তদন্তে জানা গিয়েছে অপহরণকারীরা সংখ্যায় ছিল ১২ জন। এদের মধ্যে ৬ জন ত্রিপুরার এনএলএফটি ও বাকি ছয়জন ব্রু জঙ্গি। তাদের মধ্যে দু’জনকে ত্রিপুরা পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে। অপহরণকারীদের মধ্যে পাঁচজনের কাছে একে ৪৭ রাইফেল ও অন্যজনের হাতে এসএলআর রয়েছে।” তিনি জানান পুলিশ, সিআইডির অক্লান্ত অভিযান ও চাপের ফলেই জঙ্গিরা বাধ্য হয়ে, দু’জনকে গত কাল বিকেলে বাংলাদেশ সীমান্তের প্রত্যন্ত জঙ্গলে মুক্তি দেয়। দীপকেও জঙ্গিরা শীঘ্র মুক্তি দেবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও আশাবাদী।
আজ বাঁকুড়ায় দীপের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ১১ তারিখ দীপের বাবা নিখিল মণ্ডল মিজোরামে গিয়েছিলেন। তিনি মামিতের এসপি, সংশ্লিষ্ট ডিআইজি-র সঙ্গেও দেখা করেন। তাঁরা তাঁকে ধৈর্য্য ধরতে বলেন। নিখিলবাবু জানান, “রবিবার সকাল ১১ টা নাগাদ দীপ জঙ্গিদের কাছ থেকে আমাকে ফোন করেছিল। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে ওর সঙ্গে কথা বলেছি। দীপ বলছিল, ওরা ওকে মারধর করছে। সম্পত্তি, বাড়িঘর সব বিক্রি করে মুক্তিপণের টাকা মিটিয়ে দিতে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু অত টাকা আমরা কোথায় পাব? মুক্তিপণ দেওয়ার সামর্থ্য যে আমাদের নেই তা জানিয়ে দিয়েছি।” বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “দীপকে উদ্ধারের ব্যাপারে মিজোরাম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.