সাময়িক সমস্যা মেটায় আপাতত উঠেছে ধর্মঘট। কিন্তু যথাযথ দাবিপূরণ না হলে ফের ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরিবহণ কর্মীরা। ফের তা হলে নানা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা পাঠাতে সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা খনি কর্তৃপক্ষের।
সম্প্রতি জামুড়িয়ায় পরিবহণ ধর্মঘটে জেরবার হয় ওই বেসরকারি কয়লা খনি। এই খনিতে ১৩০টি ডাম্পার চলে। এই ডাম্পারেই রাজ্যের নানা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পাঠানো হয়। পরিবহণ কর্মী রয়েছেন শ’তিনেক। ধর্মঘটের জেরে কয়লা পাঠাতে না পেরে সমস্যায় পড়েছিলেন খনি কর্তৃপক্ষ। ধর্মঘট চললে আরও বিপাকে পড়ার আশঙ্কায় ছিলেন তাঁরা। তবে সাময়িক ভাবে ধর্মঘট তুলে নেন পরিবহণ কর্মীরা। ধর্মঘটের নেতৃত্বে ছিল আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ‘আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’। তাদের দাবি, পরিবহণ কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি ও তাঁদের চিকিৎসার জন্য ইএসআইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সংগঠনের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া বলেন, “আলোচনার স্বার্থে আমরা এই ধর্মঘট আপাতত তুলে নিয়েছি। কিন্তু দাবি পূরণ না হলে ফের ধর্মঘট করব।”
এই ফের ধর্মঘটের হুমকির জেরেই শঙ্কায় খনি কর্তৃপক্ষ। সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর বিশ্বনাথ দত্ত জানান, রাজ্যের বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এই কয়লা পাঠানো হয়। কয়লার অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হতে পারে। তার প্রভাব পড়তে পারে জনজীবন ও বিভিন্ন শিল্প সংস্থায়। বিশ্বনাথবাবু বলেন, “ভবিষ্যতে আর যেন এ ধরনের ধর্মঘট না হয়, সে বিষয়ে আমরা যথাযথ জায়গায় আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর সম্পাদক রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানেরও মত, আলোচনার মাধ্যমে দাবি মেটালেই সন্তোষজনক পরিস্থিতি বজায় থাকবে।
আলোচনার রাস্তায় না গিয়ে, আগাম কিছু না জানিয়ে হঠাৎ কেন ধর্মঘটে নামলেন পরিবহন কর্মীরা? ‘মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক রাজু অহলুয়ালিয়ার দাবি, “আমরা ছ’মাস আগে আলোচনা চেয়ে উপ-শ্রম কমিশনারকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তাঁরা কোনও আমল দেননি। তাই ধর্মঘটে গিয়েছি।” উপ-শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী অবশ্য জানান, এই বিষয়টি তাঁদের এক্তিয়ারে ছিল না। সেটি রিজিওনাল শ্রম দফতরের অধীনে। ফলে, তাঁরা কোনও বৈঠকের ব্যবস্থা করতে পারেননি। তাঁদের সঙ্গে ওই কর্মী সংগঠনের কেউ আর পরে যোগাযোগ না করায় বিষয়টি তাঁদের জানানো যায়নি বলে পার্থপ্রতিমবাবু জানান। |