চাহিদায় ভাটার টান। মন্দার ধাক্কায় আন্তর্জাতিক বাজার এখনও ধুঁকতে থাকার কারণে মার খাচ্ছে রফতানি। তাই ব্যবসা ক্রমশ কমছে গয়না শিল্পে রাজ্যের একমাত্র বিশেষ আর্থিক অঞ্চল (সেজ) মণিকাঞ্চনে। পাল্লা দিয়ে কমছে কর্মীও। এরই মধ্যে সম্প্রতি সেখানে একটি লগ্নি প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু তৈরি পরিকাঠামোর ২৫% এখনও ফাঁকা। তাই বিনিয়োগের নতুন প্রস্তাবে সামান্য খুশি হওয়ার বাইরে আর তেমন আশার আলো দেখছে না রাজ্যের গয়না শিল্প। বরং রফতানির বাজার ভাল থাকার সময় পরিকাঠামো সদ্ব্যবহারের চেষ্টা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে তারা।
সম্প্রতি শিল্প ও অর্থ মন্ত্রী অমিত মিত্র দাবি করেন যে, মণিকাঞ্চনে জায়গা নিতে আগ্রহী শ্রেয়ী ক্রিয়েশন। ছ’কোটি টাকা ঢালার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে শুধু একে ঘিরে আশায় বুক বাঁধা কঠিন বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত।
মণিকাঞ্চনে ব্যবসার হাল এতই খারাপ যে, চলতি অর্থবর্ষে গত বারের রফতানির অঙ্ক ছোঁয়াও শক্ত। ব্যবসার এই নিম্নগতি কয়েক বছর ধরেই চলছে। ২০১১-’১২ অর্থবর্ষে যেখানে ১০,৪২৭ কোটি টাকার রফতানি হয়েছিল, ২০১২-’১৩ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৯,৩৭৬ কোটি। আর এই আর্থিক বছরে ওই অঙ্ক এখনও পযর্ন্ত ৮ হাজার কোটির কিছু বেশি।
আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদার মন্দায় মার খাচ্ছে দেশের অন্যান্য গয়না-সেজও। কিন্তু মণিকাঞ্চনে সমস্যার বোঝা আরও ভারি। সংশ্লিষ্ট শিল্পের অভিযোগ, রফতানি বাজার তুঙ্গে থাকার সময় এই পরিকাঠামো সদ্ব্যবহারের চেষ্টা হয়নি। স্রেফ প্রশাসনিক গড়িমসিতে ভেস্তে গিয়েছে স্থানীয় ও ভিন্ রাজ্যের সংস্থার লগ্নি প্রস্তাব। বাজার তুঙ্গে থাকাকালীন এখানে লগ্নি করতে চেয়েছিল মুম্বইয়ের সংস্থা গীতাঞ্জলি ও শ্রী গণেশ। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ফাইলবন্দিই থেকে গিয়েছে। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা পঙ্কজ পারেখের দাবি, এখন দেশের বাজার তুলনায় ভাল। ফলে শুধু রফতানির লক্ষ্যে মণিকাঞ্চনে টাকা ঢালতে আগ্রহ থাকার কথা নয়। শিল্পোন্নয়ন নিগম সূত্রে খবর, অবস্থা না-বদলালে, মণিকাঞ্চনকে নতুন করে বিপণন করা হবে। |