কাটোয়ার বিধায়ককে এ বার হুমকি অনুব্রতর
ংগ্রেস কর্মীদের কব্জি কাটা বা রাতের বেলায় বাড়িতে চড়াও হওয়ার হুমকি তো ছিলই। সোমবার দুপুরে কাটোয়া রবীন্দ্রভবনে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনে কংগ্রেস বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালানোর হুমকি দিলেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।
যাঁর নামে এই হুমকি, সেই রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় তথা কাটোয়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান ও প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার হিড়িকের মধ্যেও যে ক’জন প্রবীণ ও প্রভাবশালী নেতা পুরনো দল আঁকড়ে রয়েছেন, রবীন্দ্রনাথবাবু তাঁদের অন্যতম। তাঁর দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তর জল্পনা হলেও তা ঘটেনি।
আগামী ২৮ জানুয়ারী কাটোয়া কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন থাকায় এ দিন প্রস্তুতি সভার আয়োজন হয়েছিল। সেখানেই অনুব্রত হুমকি দেন, “আমাদের দলের কারও গায়ে বা ছাত্রদের গায়ে হাত পড়লে কংগ্রেসের কোনও সাধারণ কর্মী নয়, রবি চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালাব। তারপর থানায় যতগুলি কেস করতে পারেন, করবেন।” রবীন্দ্রনাথবাবুর প্রতিক্রিয়া, “আমি কংগ্রেস কর্মী বলে আমাকে নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের কথা বলা মানেই তো উত্তেজনা তৈরি করে শান্ত এলাকাকে অশান্ত করা।”
স্ব-মহিমায়। কাটোয়ার রবীন্দ্রভবনে কলেজ ভোটের প্রস্তুতি
সভায় অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার সকালেও কাটোয়া শহরে বোমা-গুলি চলেছে। কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের দলীয় দফতরে ভাঙচূর চালিয়েছে অভিযোগ তুলে অনুব্রত বলেন, “রবি চট্টোপাধ্যায় ঘরের ভিতরে বসে খুন করলে আমরাও বেঁচে থাকতে দেব না। তাঁকে মরতে হবে।” তাঁর চ্যালেঞ্জ, “ছাত্রদের সঙ্গে রাজনীতি না করে বাপের ব্যাটা হলে আমার সঙ্গে রাজনীতি করুন। নোংরামি করবেন না। নোংরামি করলে আমরাও দেখে নেব, আপনি কত বড় বাপের ব্যাটা!” রবীন্দ্রনাথ বলেন, “প্রশাসনের কোন স্তরে অভিযোগ জানানো প্রয়োজন, তা নিয়ে দলে আলোচনা করছি।”
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত বর্ধমানের কাটোয়ার দায়িত্বেও রয়েছেন। সভায় তিনি ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা দলের বর্ধমান জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ, বীরভূমের বিধায়ক গদাধর সাহা ও মনিরুল ইসলাম। প্রত্যেকেই কংগ্রেস বিধায়কের নাম করে আক্রমণ শানান। নেতারা প্রশ্ন তোলেন, “বর্ধমান জেলার সব কলেজ টিএমসিপি-র দখলে। কাটোয়ার গ্রাম আমাদের দখলে। তা হলে আমরা কেন কাটোয়া কলেজ পাব না?” তৃণমূলের যা শক্তি, তাতে স্রেফ হুঙ্কার ছাড়লেই ছাত্র পরিষদ বা কংগ্রেস ঘরে ঢুকে যাবে বলেও দাবি করা হয়।
কাটোয়া কলেজের ছাত্র সংসদ টানা ৩০ বছর ধরে ছাত্র পরিষদের দখলে রয়েছে। গত বছর ৪২টি আসনের মধ্যে ২৮টিতে প্রার্থী দিয়েছিল টিএমসিপি। ত্রিমুখী লড়াই সত্ত্বেও ছাত্র পরিষদই সব আসনে জেতে। সেই প্রসঙ্গ তুলে স্বপনবাবু বলেন, “কাটোয়ার নেতারা অভিযোগ করেছিলেন, কংগ্রেসের ভয়ে টিএমসিপি ওখানে প্রার্থী দিতে পারে না। এ বার স্থানীয় নেতাদের এগিয়ে এসে হাল ধরতে হবে। আমি ভোটের আগে তিন দিন কাটোয়ায় থাকব, কথা দিয়ে গেলাম।”
কিছু দিন আগেই কাটোয়া কলেজে পরপর দু’দিন ছাত্র পরিষদ ও টিএমসিপি সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছিল। বেশ কয়েক জন জখমও হয়। সপ্তাহখানেক কলেজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ।
সেই সংঘর্ষের কথা তুলে অনুব্রতবাবু দাবি করেন, “রবি চট্টোপাধ্যায় কাটোয়ায় গুন্ডামি করছে। কংগ্রেস যদি ভেবে থাকে গুন্ডামি করে, রবি চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মারধর করে জিতবে, তা হলে বড় ভুল করবে।” রবিবাবুর পাল্টা দাবি, “দীর্ঘদিন ভোটের সময়ে কলেজে যাই না আমি। সেখানে পুত্রসম ছাত্রদের গায়ে হাত দিতে বলা কল্পনাতীত। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.