ফার্মার্স ক্লাবগুলির মাধ্যমে প্যাকেট-জাত নাগেশ্বরী মুড়ি বাজারে পাঠাতে উদ্যোগী হল কৃষি দফতর। শনিবার শিলিগুড়ি মহকুমার খড়িবাড়ি ব্লকে কৃষি মেলায় ওই অভিনব প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। রবিবার থেকে মুড়ি বাজার-জাত করার কাজ শুরু হয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। এখন থেকে শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন বাজারগুলিতে ‘নাগেশ্বরী ব্র্যান্ড’ নামে রাসায়নিক মুক্ত ওই সুস্বাদু মুড়ি পাওয়া যাবে। শিলিগুড়ি মহকুমা কৃষি আধিকারিক তুষারকান্তি ভূষণ বলেন, “গুণগত মানে জন্য নাগেশ্বরী মুড়ির চাহিদা সব সময় থাকবে। চাষিরাও ভাল বাজার পেয়ে উপকৃত হবেন।”
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ও বিকালের টিফিনের জন্য উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে নাগেশ্বরী মুড়ির চাহিদা ভাল। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ওই সুযোগ নিয়ে নাগেশ্বরী নামে অন্য মুড়ি বাজারে চালিয়ে মুনাফা লুটছে বলে অভিযোগ। আবার চাষির অনেকে বেশি উৎপাদনের জন্য যথেচ্ছ ভাবে রাসায়নিক সার ব্যবহার করছেন। ফলে এক দিকে যেমন নাগেশ্বরীর স্বাদ নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের নিজস্ব এই ফসল গৌরব হারাচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে বাঙালির বিকালের আড্ডায় চানাচুর অথবা তেলেভাজা-সহ মুড়ি দিয়ে টিফিনের পুরানো স্বাদ ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে কৃষি দফতর। শিলিগুড়ি মহকুমার আধিকারিকরা ফার্মার্স ক্লাবের মাধ্যমে নাগেশ্বরী ধান উৎপাদন ও মুড়ি তৈরি করে বাজারজাত করার পরিকল্পনা নেন। শুরু হয় চাষের প্রস্তুতি। কৃষি আধিকারিকেরা প্রথমে জমি চিহ্নিত করে ২০টি ফার্মার্স ক্লাবের সদস্য চাষিদের জৈব পদ্ধতিতে চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এর পরে মহকুমার খড়িবাড়ি ও ফাসিদেওয়া ব্লকের প্রায় তিনশো বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক বাবে চাষ শুরু হয়।
খড়িবাড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক মেহফুজ আহমেদ জানিয়েছেন, ৩০০ বিঘা জমি থেকে দুশো টন ধান উৎপাদন হয়েছে। ওই ধানের চাল থেকে প্রায় ১০৯ টনের মতো মুড়ি পাওয়া যাবে। মুড়ি তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। ফার্মার্স ক্লাবগুলি নিজস্ব উদ্যোগে ‘নাগেশ্বরী ব্র্যান্ড’ নামে মুড়ি প্যাকেট-জাত করে বাজারে পাঠাবে। ব্লক কৃষি আধিকারিক এ প্রসঙ্গে বলেন, “উৎপাদন থেকে বিপণন প্রতিটি কাজে প্রাথমিকভাবে আমরা ফার্মার্স ক্লাবগুলিকে সাহায্য করছি। আশা করি পরের বছর থেকে সাহায্যের প্রয়োজন হবে না।” রবিবার হাজার প্যাকেট মুড়ি বাজারে আসে। দাম আড়াইশো গ্রাম ১৫ টাকা ও পাঁচশো গ্রাম ৩০ টাকা। ক্রেতার সুবিধায় প্যাকেটে লিখে রাখা হয়েছে ‘কৃষি দফতর অনুমোদিত’। |