অসমের কোকরাঝাড়ে যাত্রী হামলার জেরে রবিবার সকাল থেকেই উত্তর-পূর্ব ভারতের চারটি রাজ্যের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এ দিন সকালে শিলিগুড়ির বেশ কয়েকটি ভ্রমণ সংস্থা বাস চালানোর প্রস্তুতি নিলেও, গত শুক্রবার যাত্রিবাহী বাস থেকে ৬ জন যাত্রীকে নামিয়ে গুলি করে মেরে ফেলার ঘটনার প্রতিবাদে অসমের পরিবহণ সংগঠনগুলি বন্ধ পালন করছে বলে জানতে পেরে রবিবার শিলিগুড়ির সংগঠনগুলিও বাস চালানো বন্ধ করে দেন। আজ, সোমবারও উত্তরপূর্ব ভারতগামী বাস চালানো হবে না বলে দার্জিলিং জেলা অসম বাস মালিক এবং বুকিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে। জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে ও যথাযথ নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে সোমবারও ওই রুটে বাস ধর্মঘট ডেকেছে অসম এবং শিলিগুড়ির দুই সংগঠন। শিলিগুড়ি থেকে অসমের গুয়াহাটি, শিলচর, লাখিমপুর সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রতি দিন বাস চলাচল করে। |
শিলিগুড়িতে থমকে অসমগামী বাস। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
অসমের মতোই সংলগ্ন মেঘালয়, মণিপুর এবং নাগাল্যান্ডেও প্রতিদিন শিলিগুড়ি শহর থেকে বাস যাতায়াত করে। শুক্রবারের ঘটনার পর শনিবার বাস চলাচল করলেও অনান্য দিনের থেকে সংখ্যার নিরিখে তা ছিল অনেক কম। শিলিগুড়ি থেকে উত্তরপূর্ব ভারতে প্রতি দিন অন্তত ১৫টি বাস যাতায়াত করে। অন্য দিকে, শিলিগুড়ি পৌঁছোয় প্রায় ২০টি বাস। রবিবার কোনও দিক থেকেই বাস চলাচল করেনি। অসমের সংগঠনগুলি রবিবার বন্ধ পালনের পরে আজ সোমবার অসম এবং শিলিগুড়ি দুই সংগঠনের যৌথ বনধ রয়েছে।
শিলিগুড়ির সংগঠনের সভাপতি বাচ্চু দত্ত এই দিন বলেন, “নিরাপত্তার দাবিতে সোমবার বন্ধ পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে রবিবার থেকেই অসমের সংগঠন বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বলে জানিয়ে আমাদেরও এক বার্তা দেওয়া হয়। সেই মতো রবিবার থেকেই বাস চালানো বন্ধ রাখা হয়েছে। এই দিন অসম তো বটেই, মণিপুর এবং নাগাল্যান্ডের রুটেও এ দিন বাস চালানো হয়নি।” সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবারের জঙ্গি হামলার পরে বাসে যাত্রী সংখ্যাও হু হু করে কমতে শুরু করেছে। শনিবার যাত্রীর সংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম। রবিবার একটি পরিবহণ সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিলিগুড়ি-শিলঙের বাসে প্রতিদিন গড়পড়তা ৩০ জন যাত্রী থাকলেও শনিবার বেশির ভাগ বাসেই ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানানো হয়েছে। রবিবার শিলঙের বাস ধরতে বাস স্ট্যান্ডে এসে ফিরে গিয়েছেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা রাকেশ অগ্রবাল। তিনি এই দিন বলেন, “গত শনিবার-ই যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু শুক্রবারের হামলার ভয়ে আর যাইনি। ব্যবসার কাজ, তাই বাধ্য হয়ে আজ এসেছিলাম। যদিও বাস পেলাম না। এমন হামলার ঘটনার পরে নিয়মিত যাতায়াত বন্ধ রাখার কথা ভাবছি।” এ দিন শিলিগুড়ি-অসম বাস মালিকদের সংগঠনের সম্পাদক বাপ্পা ভৌমিক বলেন, “যাত্রীরা তো আতঙ্কিত বটেই, বাস চালক-কর্মীদের একাংশের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তাঁরাও আর যেতে চাইছেন না।” সংগঠনের সভাপতি বাচ্চুবাবু হুমকি দিয়ে বলেন, “আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করব, রাতের বেলায় বাসগুলিকে নিরাপত্তা না দিলে আগামী সপ্তাহেও ফের বন্ধ হবে।” |