‘সাইবার ওয়ারে’ স্থানীয় স্তরে তাঁর বিরোধীরা দুই বছর ধরে সক্রিয় হলেও এত দিন চুপচাপই ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শেষ পর্যন্ত তিনিও নেমে পড়লেন তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রচারের যুদ্ধে। সম্প্রতি গৌতমবাবু ফেসবুকে নিজের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট খুলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বিভিন্ন কাজকর্মের প্রচারের কাজে হাত দিয়েছেন। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে শতাধিক মানুষ তাঁর অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নিজেদের জুড়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, আপাতত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফর এবং তৃতীয় উত্তরবঙ্গ উত্সব নিয়ে ব্যস্ত মন্ত্রী। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজের খতিয়ে ফেসবুক পেজে তুলে ধরার কাজ শুরু করবেন বলে দফতরের একাংশ আধিকারিককে জানিয়ে দিয়েছেন। এর জন্য সমস্ত তথ্য কম্পিউটারে একযোগে নথিবদ্ধ করার কাজও শুরু হয়েছে। আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর পুরানো উত্তরবঙ্গ সফর, উত্তরবঙ্গ উত্সব এবং সুচিত্রা সেনে’র মৃত্যুর পর দফতরের কিছু অনুষ্ঠানের ছবি তুলে ধরা হয়েছে গৌতমবাবুর অ্যাকাউন্টে। রবিবার মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রচার একটি বড় মাধ্যম। আমি নিজের আকাউন্টে ঠিক করেছি, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম মানুষের সামনে তুলে ধরব। বিভিন্ন শেষ হওয়া, চলতে থাকা এবং আগামী দিনের প্রকল্পগুলি নিজের অ্যাকাউন্টে তুলে ধরব।” মন্ত্রী জানান, সংবাদপত্র-সহ নানা মাধ্যমের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কাজ হচ্ছে ঠিক। তবে এ মাধ্যমটিকেও ব্যবহার করতে হবে। ২০১১ সালের জুলাই মাসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর গঠনের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়, উত্তরবঙ্গ উত্সব, আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজকে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসাবে গড়ে তোলা, জাতীয় টেবিল টেনিসের আসর-সহ রাস্তা, সেতু, হাসপাতাল, ক্রীড়া, পর্যটনের প্রচুর কাজ হয়েছে। আগামী দিনে আরও হবে। এই মাধ্যম দিয়ে যা লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। মানুষের বিভিন্ন মতামত এখান থেকে পাওয়া যাবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই ফেসবুকে সক্রিয়। কেন্দ্রের সমালোচনা থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন কাজকর্ম ছাড়াও বিভিন্ন দলীয় সিদ্ধান্তও তিনি নিয়মিত নিজের অ্যাকাউন্টে তুলে ধরেন। দক্ষিণবঙ্গের তৃণমূল নেতারা এই মাধ্যমে সক্রিয় হলেও উত্তরবঙ্গের কিছুদিন আগে পর্যন্ত দলীয় নেতাদের মধ্যে এর খুব চল ছিল না। একমাত্র কোচবিহারের রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কিছুটা সক্রিয় ছিলেন। পরে রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বা প্রাক্তন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন কিছুদিন ধরে নিজেদেরকে এই মাধ্যমের সঙ্গে জুড়েছেন। সেই তুলনায় কংগ্রেস বা বাম নেতারা দুই বছর ধরেই সোসাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পুরোপুরি সক্রিয়। ফরওয়ার্ড ব্লক উদয়ন গুহ, সিপিএমের জীবেশ সরকার, কংগ্রেসের শঙ্কর মালাকার, সুজয় ঘটক, পিনাকি সেনগুপ্ত নেতারা এর অন্যতম। নেটওয়ার্কিং সাইট প্রচারে হাতিয়ার করতে দেশব্যাপী মিডিয়া সেল খুলছে কংগ্রেস। গত সপ্তাহে প্রদেশ কংগ্রেস দার্জিলিং জেলায় এই দায়িত্ব দিয়েছে দলের জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটককে। গত ১৬ ডিসেম্বর বাগডোগরায় সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কশপও হয়েছে। সুজয়বাবু বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত, প্রচার ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই মিডিয়াকে ব্যবহারের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা ওয়ার্কশপ করে তাতে দলীয় কর্মীদের ফেসবুক এবং টুইটারে প্রতিদিন দুটি করে পোস্ট বা টুইট করতে বলা হয়েছে।” |