ঘাসের কার্পেট এনে পাতা হয়েছে মাসখানে আগে। তা এখন মাটি আঁকড়ে বেশ শক্তপোক্ত। সারি সারি পাম গাছও বোনা হয়েছে। এখন তা অনেকটাই বেড়ে উঠেছে। শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে কামারাঙাগুড়ির চেহারা যেন পাল্টে দিয়েছে ‘উত্তরকন্যা’। মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গের সচিবালয়ের নাম। সম্পূর্ণ এলাকার পরিমাণ প্রায় দেড় লক্ষ বর্গফুট। আপাতত ৬০ হাজার বর্গ ফুট এলাকায় কাজ হয়েছে। যেখানে ২০টি দফতরের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের অফিসাররা রোজই বসবেন। |
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি উত্তরকন্যায়। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
সচিবালয়ের মূল দোতলা ভবনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শেষ। প্রথম তলার কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শেষ করে ফেলা হয়েছে। দ্বিতীয় তলার বাকি কাজও শীঘ্রই শেষ করে ফেলা হবে বলে সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে অ্যাকোরিয়াম, এলসিটি টিভি, অত্যাধুনিক কম্পিউটার মনিটর দিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর বসার টেবিলটি করা হয়েছে অর্ধ গোলাকৃতি। সেখানেই ভবনের উদ্বোধনের পর কিছুক্ষণ সময় কাটাবেন মুখ্যমন্ত্রী বলে আপাতত ঠিক হয়েছে। নিরাপত্তার দিক থেকে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন। এদিন সারাদিন ঘুরে তিনি সচিবালয় ও উত্তরবঙ্গ উৎসব নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের জেলা নেতা মদন ভট্টাচার্য এবং শিলিগুড়ি পুলিশের শীর্ষস্থানীয় সমস্ত কর্তারাই। প্রস্তুতিতে কোনও রকম খামতি রাখতে রাজি নন তিনি।
সব ঘুরে দেখে খুশি গৌতমবাবু বলেন, “সমস্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিছু শেষ মুহূর্তের কাজ বাকি রয়েছে, তাও এদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।” সোমবারের গোটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কিভাবে পরিচালিত হবে তা খুঁটিয়ে জেনে নেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক রাখা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন। তিনি বলেন, “গোটা সচিবালয় এলাকায় পুলিশি পাহারা থাকছে। প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে পরীক্ষা করানো ও এলাকা স্ক্যানার দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে।”
মোট ২০টি দফতরের যুগ্ম সচিব সচিবালয়ে নিয়মিত বসবেন। এখন থেকে যে কোনও কাজের জন্য এখন আর প্রথমেই নবান্নে ছুটতে হবে না।
সোমবার উত্তরকন্যার উদ্বোধনের আগে উত্তরবঙ্গ উৎসবেরও উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। উৎসবের মঞ্চ থেকেই বঙ্গরত্ন পুরস্কার দেওয়া হবে। ৭ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাপকদের মধ্যে শিক্ষাবিদ প্রদ্যোত ঘোষ, বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী, চারণ কবি মহম্মদ জহিরুল মিয়াঁ, সাহিত্যিক সত্যরঞ্জন দাস, কৃষ্ণ সিংহ মোক্তান ও লোকশিল্পী ধনেশ্বর রায়, সাহিত্যিক প্রণব মুখোপাধ্যায় রয়েছেন।এবারের উত্তরবঙ্গ উৎসবের থিম জেলা ‘মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর’। ২০-২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে উৎসব। মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরের দুই জেলার সংস্কৃতি ও শিল্পকে তুলে ধরা হবে উত্তরবঙ্গ উৎসবে। ছয় জেলাতেই হবে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান। আগের দু’বার উৎসবে স্থান পাওয়া সব অনুষ্ঠান ও খেলা এ বারও থাকছে। নতুন কয়েকটি খেলাও চালু করা হতে পারে। |