টার্গেট ১১৩। প্রথম বলেই আউট পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার। দ্বিতীয় উইকেটের পতনের পরে ব্যাট করতে নামলেন স্বয়ং জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী। কিন্তু সুবিধা করতে পারলেন না অধিনায়কও। তখনও টিকে ওপেনার অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রকাশ পাল। তাঁকে ঘিরে যখন আশা তৈরি হচ্ছিল, তখনই আচমকা লাফিয়ে ওঠা একটি বলে গালিতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন তিনিও। ম্যাচের ধারাভাষ্যকারের মন্তব্য, “কী গুরু? হল না!”
শনিবার দুপুরে পুরুলিয়ার মানভূম ত্রীড়া সংস্থার মাঠে এমনই নানা মুহূর্ত তৈরি হল রাজ্য নিবার্চন কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নিবার্চক প্রিমিয়ার লিগ ২০১৪’-র উদ্বোধনী ক্রিকেট ম্যাচে। যেখানে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা খেললেন এ বারই প্রথম ভোটার তালিকায় নাম ওঠা নবীন প্রজন্মের বিরুদ্ধে। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ সেই ম্যাচে তন্ময়বাবুরা হারলেন ৩৩ রানে। তন্ময়বাবুদের দলে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সবুজবরণ সরকার, একশো দিনের কাজের প্রকল্প আধিকারিক দেবাশিস চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) মলয় হালদার-সহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের একাধিক শীর্ষ কর্তা। ছিলেন ব্লক আধিকারিকেরাও।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ১৫ ওভারে নবীনদের দল ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান করে। কমান্ডো বাহিনীর কনস্টেবল দিব্যেন্দু পাণিগ্রাহী ৩ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে বিপক্ষের ৩টি উইকেট তুলে নেন। ভাল বল করেন আড়শার যুগ্ম বিডিও স্বর্ণকমল চৌধুরীও। তিনি ৩ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৩টি উইকেট পান। উইকেটের পিছনে শূন্যে শরীর ছুঁড়ে দিয়ে দু’টি ক্যাচ ধরে দর্শকদের হাততালি কুড়োলেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্মী সন্তোষ বন্দ্যোপাধ্যায়। নবীনদের অনেকেই জেলা দলে খেলেন। ৮ উইকেট তুলে নিয়ে এমন দলকে ১১৩ রানে আটকে রাখায় ম্যাচ জেতার বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন অনেক কর্তাই। যদিও ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১.১ ওভারে ৩ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। ভাল বল করার পাশাপাশি দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭ রান করে কিছুটা মুখ রক্ষা করলেন স্বর্ণকমলবাবুই। ইনিংস শেষ হয় ৮০ রানে। ৪৬ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ বিরজু কর্মকার।
বাঘমুণ্ডির শঙ্কর কুমার, নিতুড়িয়ার পারবেলিয়ার শুকচাঁদ সিংহ, পরাণ বাগদি, পুরুলিয়ার মহম্মদ আহসান সকলেরই এই প্রথম ভোটার তালিকায় নাম উঠেছে। এমন ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়ে প্রত্যেকেই খুশি। দলের অধিনায়ক শুভম দত্ত বলেন, “এই খেলা চিরদিন মনে থাকবে।” জেলা নিবার্চন কমিশনের আধিকারিক প্রবীর ঘোষ জানান, নিবার্চন কমিশনের নির্দেশে প্রচারের লক্ষ্যে সব জেলাতেই এই খেলা হচ্ছে। ম্যাচের শ্লোগান ছিল ‘চলো ভোট দিই, দেশ গড়ি’। |