বাড়ি থেকে বুধবার বেরিয়ে আর ফেরেননি খাতড়া আদিবাসী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী অনুশ্রী কর্মকার (২০)। পরের দিন সকালে বাঁকুড়ার ভৈরবস্থানের কাছে, রেললাইনের ধার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করেছিল রেলপুলিশ। খাতড়া থানার বেনা গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণীকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করল মৃতার পরিবার। শনিবার রাতে খাতড়া থানায় অনুশ্রীর পড়শি এক তরুণী ও পাশের গ্রামের এক যুবকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর বাবা তপন কর্মকার।
পুলিশ অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশকুমার রবিবার বলেন, “ওই কলেজ ছাত্রীকে খুন করা হয়েছে বলে তাঁর বাবা দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন। রেলপুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক। তাঁদের খোঁজা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার গ্রামেরই এক তরুণীর (যিনি কলেজে অনুশ্রীর সহপাঠীও) সঙ্গে অনুশ্রী কলেজে যাচ্ছেন জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। বৃহস্পতিবার সকালে বাঁকুড়া-আদ্রা রেললাইনের মাঝখান থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর দেহ উদ্ধার করে বাঁকুড়া রেলপুলিশ। ওই দিনই খাতড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন অনুশ্রীর বাবা। শুক্রবার বাঁকুড়ায় গিয়ে অনুশ্রীর দেহ শনাক্ত করেন পরিবারের লোকেরা। শনিবার খাতড়া থানায় মৃতার বাবা তপন কর্মকার তাঁদের প্রতিবেশী, অনুশ্রীর ওই সহপাঠী এবং পাশের চাকা গ্রামের বাসিন্দা এক যুবকের বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তপনবাবুর অভিযোগ, “আমাদের সন্দেহ ওই মেয়েটি এবং চাকা গ্রামের এক যুবক অনুশ্রীকে বাঁকুড়ায় ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করে রেললাইনের ধারে ফেলে দিয়েছে।” যদিও বাঁকুড়া জিআরপি-র এক আধিকারিক বলেন, “প্রাথমিক ভাবে দেহটি দেখে অনুমান করা হচ্ছে, ওই তরুণী ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁর মাথা থেঁতলে গিয়েছিল। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। খুনের প্রমাণ এখনও মেলেনি। তবে, তদন্ত চলছে।” জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ওই তরুণীর মোবাইলটি এখনও উদ্ধার হয়নি। তদন্তের স্বার্থে ওই মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হবে। এ দিন অভিযুক্তদের পরিবারের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পারায় তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি। |