|
|
|
|
এ বার সুতাহাটা দখলের হুঁশিয়ারি শুভেন্দু’র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
হলদিয়া পুরসভার পর সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতি থেকেও সিপিএমকে হঠানোর হুঁশিয়ারি দিলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার সুতাহাটার আজাদ হিন্দ ময়দানে হাজার পনেরো সমর্থক নিয়ে তৃণমূলের সমাবেশে শুভেন্দু মনে করিয়ে দেন, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে হলদিয়ার হেলিপ্যাড ময়দানে হলদিয়া পুরসভা দখলে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা করেছেন ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে। শুভেন্দু বলেন, “অতীতে হলদিয়া পুরসভা নিয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি আমি রক্ষা করেছি। আজ ফের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, লোকসভা ভোটের আগে অগস্ট মাসে সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতি থেকে সিপিএমকে হঠাব।” উল্লেখ্য, জেলার বাম-দখলে থাকা সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতির ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে মাত্র ৫টি আসন। |
|
আজাদ হিন্দ ময়দানের সভায় শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: আরিফ ইকবাল খান। |
এ দিন সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতির আশাদতলিয়া পঞ্চায়েতের ‘দখল’ নেয় শাসকদল। এই ব্লকের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে এত দিন কুঁকড়াহাটি ও জয়নগর গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল তৃণমূলের দখলে। কিন্তু, আশাদতলিয়া পঞ্চায়েতে উভয়পক্ষের আসন সংখ্যা সমান থাকায় টসে জিতে পঞ্চায়েত দখলে রেখেছিল সিপিএম। এ দিন ওই পঞ্চায়েতের প্রধান শিবানী বাখুলি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে এল। সম্প্রতি তমলুকের ময়না ও শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকে একটি করে পঞ্চায়েত দখলে নিয়েছে তৃণমূল।
সিপিএমের রক্তক্ষরণ বাড়িয়ে এ দিনই তৃণমূলে যোগ দেন এক দল সিপিএম নেতা। আতিয়ার শাহ, আবদুল হাই ও শেখ গোলাম হোসেন এবং সিটু নেতা গোলোক দাস শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন। তা ছাড়া হলদিয়া ব্লকের দোভোগ পঞ্চায়েতের সদস্য সিপিএমের কবিতা দাস, চকদ্বীপা পঞ্চায়েতের সদস্য কংগ্রেসের সাকিনা বিবি, কংগ্রেসের সুতাহাটা প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মণিরুল ইসলাম, এলাকার পিডিএস দলের নেতা সৈয়দ জাকির আলি তৃণমূলে এলেন।
গত সেপ্টেম্বরে সিপিএমের তিন কাউন্সিলার বিকাশ জানা, দুলাল জানা, গোপালচন্দ্র দাস এবং সিপিআই কাউন্সিলার শুকদেব দোলাইয়ের সমর্থন নিয়ে হলদিয়া পুরসভায় ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। সমর্থনের ‘পুরস্কার’ হিসাবে গোপালবাবুকে উপপুরপ্রধানের পদ ও অন্য দুই সিপিএম কাউন্সিলারকে পুর পারিষদ পদ দিয়েছিলেন শুভেন্দু। এ দিন সেই পথ ধরেই তৃণমূলে যোগ দিলেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলার আবদুল কালাম। ২৬ আসন বিশিষ্ট হলদিয়া পুরসভায় এর ফলে তৃণমূলের কাউন্সিলার সংখ্যা বেড়ে হল ১৬। এ দিন মঞ্চ থেকে শুভেন্দু বলেন, “আমাদের সময় দিন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি আমরা কাজে করে দেখাব।”
প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের ‘হলদিয়া উত্সব’কে কটাক্ষ করে বলেন, “আমরা লক্ষ্মণবাবুর মতো চাঁদা বা তোলা তুলে উত্সব করি না।” তিনি জানান, ২২-২৬ জানুয়ারি সংহতি ময়দানে উন্নয়নকে সামনে রেখে শিল্প সংস্থাকে পাশে নিয়ে ‘হলদিয়া বাণিজ্য মেলা’ হচ্ছে। ২৮ জানুয়ারি হলদিয়া শহরের রাধাবল্লভচকে প্রস্তাবিত ১০০ শষ্যার ইএসআই হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু আসবেন বলে শুভেন্দু জানান। উল্লেখ্য, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ ইতিমধ্যেই হাসপাতালের জন্য ছ’একর জমি দিয়েছে।
শুভেন্দু’র হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে হলদিয়ার সিপিএম জোনাল কমিটির সম্পাদক সুদর্শন মান্না বলেন, “নির্বাচনে মানুষের সমর্থন না পেলেও হুমকি দিয়ে, জনপ্রতিনিধিদের বাড়ি-সম্পত্তির উপর আক্রমণ করে দলবদলে বাধ্য করছে তৃণমূল। মানুষই এর জবাব দেবেন।” |
|
|
|
|
|