সিভিক পুলিশের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার
লায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক সিভিক পুলিশকর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। শনিবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি থানার অজানবাড়ি গ্রামে বাড়িতেই সোনু পাত্র (২৩) নামে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ মেলে। খেজুরি থানায় গত চার মাসের মধ্যে প্রায় ৩০ দিন সিভিক পুলিশের কাজ করেছেন সোনু। কিন্তু এক দিনেরও বেতন মেলেনি। চরম অর্থাভাবে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে বাড়ির লোকেদের দাবি। তবে পুলিশের বক্তব্য, স্ত্রী-র সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন।
খেজুরি থানা অবশ্য মেনে নিচ্ছে, এলাকার তিনশোরও বেশি সিভিক পুলিশকর্মীর কেউই এখনও বেতন পাননি। হিসাবপত্রের কাজ চলছে। যদিও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “কাজ করলে সিভিক পুলিশদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। বেতন পাননি বলে কেউ আত্মঘাতী হয়েছেন, এমন অভিযোগ আসেনি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পাশ সোনু আগে খেজুরির বিদ্যাপীঠ মোড়ে ফুচকা ও অন্য খাবার বিক্রি করতেন। অনেক দিন আগেই তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। এক বোন, মা ও স্ত্রী-র সংসারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন সোনু। তাঁর ফুচকা বিক্রির টাকায় চলত অভাবের সংসার। মাস চারেক আগে সিভিক পুলিশের চাকরি পেয়ে ফুচকা বিক্রি ছেড়ে দেন সোনু। তার পর খেজুরি থানায় দফায়-দফায় কাজ করলেও বেতন মেলেনি। জমি না থাকায় চাষবাস থেকেও আয় ছিল না। সব মিলিয়ে তীব্র আর্থিক সঙ্কটে পড়ে পাত্র পরিবার। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বুলুদেবীর সঙ্গে সোনুর মনোমালিন্য শুরু হয়।
সোনুর ছোট বোন সপ্তমী পাত্র স্থানীয় খেজুরি আদর্শ বিদ্যাপীঠের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তার কথায়, “মাস চারেক কাজের পরও বেতন পাচ্ছিল না দাদা। আমাদের সংসার আর চলছিল না। বৌদির সঙ্গে দাদার অশান্তি শুরু হয়। গত শুক্রবার বৌদি বাপের বাড়ি পাশের সাহাপুর গ্রামে চলে যায়। এতে দাদা মানসিক ভাবে আরও ভেঙে পড়ে।” খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল মিশ্র ও অজানবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য প্রদ্যোৎ মণ্ডল বলেন, “সিভিক পুলিশের কাজ পাওয়ার পর ফুচকা বিক্রিটা ছেড়ে দিয়েছিল সোনু। এ দিকে ওখানেও টাকা পাচ্ছিল না।”
বস্তুত, নিয়মিত কাজ ও বেতন না পাওয়ায় এ ভাবেই অনটনের খাঁড়া নেমে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুর-সহ অন্য জেলার বহু সিভিক পুলিশকর্মীর পরিবারে। নিয়মিত কাজের দাবিতে পশ্চিম মেদিনীপুরে সিভিক পুলিশকর্মীদের একটি সংগঠনও গড়ে উঠেছে।
সিভিক পুলিশদের সমস্যার কথা মানলেও জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের যুক্তি, “এটা যে স্থায়ী চাকরি নয়, উৎসব বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো পরিস্থিতিতেই কাজ মিলবে, সেটা শর্তে লেখা রয়েছে। তারপরেও লোকজন এর আশায় অন্য উপার্জনের রাস্তা ছেড়ে দিলে আমরা কী করব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.