তৃণমূল প্রধানের সঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশের সংঘাতে বন্ধ হয়ে গেল গ্রামের উন্নয়ন। আরামবাগের সালেপুর-১ পঞ্চায়েতে দেখা দিয়েছে এই পরিস্থিতি। বেশ কয়েক জন পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে উন্নয়নের কাজে বাধা দেওয়া-সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারিতার লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন বিডিওর কাছে। অন্য দিকে, এলাকায় উন্নয়নের দাবি নিয়ে বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন স্থানীয় মানুষজনও। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে বিষয়টি মিটমাটের আশ্বাস দিয়েছেন আরামবাগের বিডিও প্রণব সাঙ্গুই।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতের কিছু সদস্যের সঙ্গে বেশ কিছু দিন ধরেই বনিবনা হচ্ছিল না প্রধান গুণধর খাঁড়ার। এই পঞ্চায়েতে রয়েছে ১৩টি সংসদ। বেশ কিছু সংসদের মানুষজনের অভিযোগ, সদস্যেরা যেখানে একশো দিনের কাজ করাতে চাইছেন, সেখানে প্রধান কাজ করাতে দিচ্ছেন না। অন্যত্র নিজের লোক পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সেটাই পঞ্চায়েত সদস্যেরা মেনে না নেওয়ায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। গরিবদের সরকারি অনুদান বা অন্যান্য পরিষেবার ক্ষেত্রে সংসদের সদস্যেরা যে তালিকা পাঠাচ্ছেন, তা বাতিল করে নিজের পছন্দের লোকের নাম দিয়ে অন্য তালিকা তৈরি করে প্রধান পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বহু মানুষ।
প্রধানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছেন বেশ কিছু পঞ্চায়েত সদস্যও। তাঁদেরই এক জন মামনি কিস্কুর অভিযোগ, তাঁকে কিছু না জানিয়ে তাঁরই এলাকায় প্রধান নিজের ইচ্ছামতো কাজ চালাতে চাইছেন প্রধান। তাঁর এলাকায় বিপিএলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকা সত্ত্বেও তাঁদের পাওনা থেকে পরিকল্পিত ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় তাঁর প্রতি অশালীন মন্তব্য করেছেন প্রধান। পঞ্চায়েত সদস্য তথা দলের অঞ্চল সভাপতি সুফল চানকের অভিযোগ, রাস্তার মাপজোক না করেই যথেচ্ছ এবং যত্রতত্র বোল্ডার ও মোরাম ফেলা হচ্ছে। জানতে চাইলে দুর্ব্যবহার করছেন প্রধান। একই অভিযোগ চন্দনা কোলে, রণজিৎ জলকরেরও। প্রত্যেকেই নিজের অভিযোগ লিখিত ভাবে জানিয়েছেন বিডিওর কাছে।
কিন্তু যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, তিনি নিজে কী বলছেন? পঞ্চায়েতের কয়েকটি সংসদে উন্নয়নে ব্যাঘাতের কথা স্বীকার করে প্রধান গুণধরবাবু বলেন, “চুরি করতে দিচ্ছি না বলেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন কিছু সদস্য। অপবাদ রটিয়ে আমাকে তাড়াতে চাইছেন।” সমস্ত বিষয়টি বিডিও ও এলাকার বিধায়ককে জানিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান। আলোচনা সাপেক্ষে মিটমাটের আশ্বাস দেন আরামবাগের বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা। |