চলো নিজের মতে
ট্রাফিক গার্ড হয়নি, মুম্বই রোডে
যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ সেই তিমিরে
রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে ‘ট্রাফিক গার্ড’ মোতায়েন হওয়ায় দুর্ঘটনা কমেছে হাওড়া শহরে। যান চলাচলে গতি এবং শৃঙ্খলা অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু ‘দুয়োরানি’ হয়ে রয়েছে হাওড়া গ্রামীণ এলাকা। যান নিয়ন্ত্রণের নির্দিষ্ট কোনও ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় প্রতিদিন মুম্বই রোডে দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। যানবাহনও চলছে বেপরোয়া ভাবে।
অথচ, ২০১০ সালে হাওড়া শহর এবং মুম্বই রোডে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে যে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হাতে নেওয়া হয়, তাতে ওই দু’টি এলাকাতেই কলকাতার ধাঁচে ট্রাফিক গার্ড (এক একটি গার্ডে ১০-১২ জন সাব-ইন্সপেক্টর এবং শ’দুয়েক ট্রাফিক কনস্টেবল) মোতায়েন করে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই প্রকল্পে হাওড়া শহরের জন্য ছ’টি এবং মুম্বই রোডের জন্য দু’টি ট্রাফিক গার্ড মোতায়েন হওয়ার কথা ছিল। তৈরির কথা ছিল স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থাও।
২০১১ সালে হাওড়া জেলা পুলিশ শহর ও গ্রামীণ এই দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। শহর পুরোটাই চলে যায় কমিশনারেটের আওতায়। সেখানে প্রকল্পটি চালুও হয়ে যায়। পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনারের নেতৃত্বে ছ’টি ট্রাফিক গার্ড এবং কয়েকটি সাব-ট্রাফিক গার্ড-এর মাধ্যমে শহরের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা শুরু হয়। এতে দুর্ঘটনা যেমন কমেছে তেমনই যান চলাচলের গতিও বেড়েছে বলে পুলিশের দাবি।

ট্রাফিক স্ট্যান্ডে নেই কোনও পুলিশ কর্মী। রাস্তা পারাপার
অতএব নিজের দায়িত্বেই। ছবি: সুব্রত জানা।
কিন্তু সেই তিমিরে পড়ে রয়েছে হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ এলাকা। পাইলট প্রকল্পে ধুলাগড়ি এবং নিমদিঘিতে যে দু’টি ট্রাফিক গার্ড তৈরি করার কথা ছিল তার কোনওটিই রূপায়িত হয়নি। এমনকী গ্রামীণ পুলিশ এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও আধিকারিকের পদ পর্যন্ত তৈরি করা হয়নি। ফলে, মুম্বই রোডে যান চলাচলেও কোনও শৃঙ্খলা আসেনি।
রাজ্য পুলিশের একটি অংশের বক্তব্য, হাওড়া শহর এলাকা কমিশনারেটের আওতায় যাওয়ায় সেখানকার জন্য পুলিশকর্মী বা অর্থ বরাদ্দ বেড়ে যায়। কিন্তু বিপরীত চিত্র গ্রামীণ পুলিশ এলাকার। ফলে, কমিশনারেট এলাকায় যে ভাবে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, তা আর সম্ভব হয়নি গ্রামীণ এলাকায়। প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিআইজি (ট্রাফিক) অজয়কুমার ঘোষের মুখেও।
তিনি বলেন, “জেলা পুলিশের আওতাধীন এলাকায় কমিশনারেট এলাকার মতো ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব নয়।” তা হলে কি মুম্বই রোডে যান চলাচল কখনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে নিয়ন্ত্রণ করা হবে না? অজয়বাবু এ বিষয়ে বলেন, “মুম্বই রোডের মতো জাতীয় সড়কগুলির ট্রাফিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করারও প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে।”
হাওড়ায় মুম্বই রোডের বিস্তৃতি ডোমজুড় থেকে কোলাঘাট পর্যন্ত। রাস্তায় সাইকেল, মোটরবাইক-সহ সব ধরনের গাড়ির চাপ থাকে। অঙ্কুরহাটি মোড়, আলমপুর মোড়, ধুলাগড়ি মোড়, রানিহাটি মোড়, পাঁচলা মোড়, নিমদিঘি মোড়, কুলগাছিয়া মোড়, লাইব্রেরি মোড়, আমতা মোড়, নবাসন মোড়, দেউলটি মোড় প্রভৃতি এলাকায় সারাদিন মানুষ পারাপার করেন। এই সব মোড় বেশ দুর্ঘটনাপ্রবণ। কিন্তু সকালে দু’ঘন্টা এবং বিকেলে দু’ঘন্টা একজন করে পুলিশ দাঁড় করিয়েই দায়িত্ব সারে জেলা পুলিশ। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
জেলা পুলিশের দাবি, বাগনান, উলুবেড়িয়া, পাঁচলা প্রভৃতি থানা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য একজন করে সাব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে জনা কুড়ি পুলিশকর্মী সকাল-বিকেল মোতায়েন করা হয়। কিন্তু তার ফাঁক গলেই যে ট্রাকের ‘লেন’ ভাঙা, হেলমেটবিহীন মোটরবাইক আরোহীদের দাপাদাপি এবং দুর্ঘটনা চলতে থাকে, তা-ও স্বীকার করেছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। তবে, এক পুলিশকর্তার দাবি, সীমিত ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করেই ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে মুম্বই রোডে দুর্ঘটনার হার কমানো সম্ভব হয়েছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.