|
|
|
|
স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা, বাঁচালেন পড়শিরা
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
সরকারি সাহায্য না-পেয়ে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেন এক ব্যক্তি।
ঘরের দরজা বন্ধ করে আট ছেলেমেয়ে এবং এক নাতনির গলায় ফাঁস পরিয়ে দিয়েছিলেন কুলতলির বাসিন্দা নূরজামাল। বিপদ বুঝে খুদেরা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। পড়শিরা দরজা ভেঙে সকলকে বাঁচান। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচারিত হওয়ার পরে তাঁর বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন জনপ্রতিনিধি, সরকারি অফিসাররা। সরকারি সাহায্যের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে নূরজামালকে।
পুলিশ জানায়, শোণিতপুর জেলার রাঙাপাড়া সমষ্টির কুলতলি-শিঙিতলি গ্রামের বাসিন্দা নূরজামালের বাড়ির সদস্য ১১ জন। রোজগেরে বলতে তিনিই একা। অসুস্থ বৃদ্ধ একদিন কাজে গেলে, দু’দিন শরীর বিশ্রাম চায়। জব-কার্ড থাকলেও সরকারি প্রকল্পে কাজ মেলেনি। স্কুলে বিনামূল্যে পাঠ্যবই না-পেয়ে নূরজাহানের ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও বন্ধ হয়েছে। ইন্দিরা আবাস যোজনার অধীনে বাড়ি পাওয়ার কথা ছিল। নূরজামালের অভিযোগ, ঘুষ দিতে না-পারায় তা-ও মেলেনি। অভাবের সংসারেই তাঁদের এক সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসা চালানোর টাকাও ছিল না নূরজামালের। অনটনের হাত থেকে বাঁচতে সপরিবার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন নূরজামাল।
শুক্রবার রাতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরে আসেন নূরজামাল। ঘরের দরজা বন্ধ করে স্ত্রী ও সন্তানদের ডাকেন। সকলকে তিনি জানান‘তাঁদের খাবার, থাকার কোনও সংস্থান নেই। এ ভাবে বেঁচে থাকা অর্থহীন। সকলে মিলে মরে যাওয়াই ভাল।’ এরপরই, তিনি ঘরের ভিতরে দু’টি বাঁশে দড়ি বাঁধেন। আট সন্তান ও তাঁর এক নাতনির গলায় ফাঁস পরিয়ে দেন। বাচ্চারা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। পড়শিরা কান্না শুনে দরজা ভেঙে অবাক। তড়িঘড়ি বাচ্চাদের গলা থেকে ফাঁস খোলা হয়। কিন্তু, নূরজামালের আর্জি ছিল, ‘আমাদের বাঁচার ক্ষমতা নেই। দয়া করে আমাদের মরে শান্তি পেতে দিন।’
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্থানীয় বিধায়ক ভীমানন্দ তাঁতি তো বটেই, এমনকী পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদ সদস্যরাও কোনওদিন গ্রামে যান না। খবর ছড়াতেই জেলা পরিষদের এক সদস্য নূরজামালের বাড়িতে হাজির হন। তাঁকে ঘিরে ধরেন গ্রামবাসীরা। জেলা পরিষদের ওই সদস্য মেনে নেন, বিভিন্ন সরকারি সাহায্য এবং ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর নূরজামালের পাওয়ার কথা ছিল। তিনি সকলের সামনে প্রতিশ্রুতি দেন, সোমবার থেকেই নূরজামালকে সরকারি সাহায্য দেওয়া হবে। |
|
|
|
|
|