|
|
|
|
আরও চমক তৃণমূলের |
মমতার প্রার্থী কে ডি সিংহ, যোগেনও
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যসভার প্রার্থী তালিকায় তৃণমূলের চমক অব্যাহত! অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর পরে এ বার তৃণমূলের তরফে রাজ্যসভার প্রার্থী হচ্ছেন চিত্রকর যোগেন চৌধুরী। পাশাপাশিই, রাজ্যসভার সাংসদ-পদের মেয়াদ ফুরোনোর আগেই ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসে ফের প্রার্থী হচ্ছেন কাঁওয়ার দীপ (কে ডি) সিংহ!
চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মিঠুনকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করার কথা শনিবারই ফেসবুকে ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রবিবার তৃণমূল ভবনে দলের আরও তিন প্রার্থীর নাম জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। যোগেন, কে ডি ছাড়া তৃণমূলের আর এক প্রার্থী কলকাতার একটি দৈনিক সংবাদপত্রের সম্পাদক আহমেদ হাসান ওরফে ইমরান। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এ বার রাজ্যসভায় যে পাঁচটি আসন খালি হচ্ছে, তার মধ্যে বিধানসভায় নিজেদের শক্তির নিরিখে তৃণমূল তিনটি আসন জিততে পারবে। প্রধান বিরোধী পক্ষ বামফ্রন্ট পাবে একটি আসন। |
 |
 |
যোগেন চৌধুরী |
কে ডি সিংহ |
|
পঞ্চম আসনটি জেতার মতো একক শক্তি কারওই নেই। ওই আসনটিতেই ইমরানকে প্রার্থী করছে তৃণমূল। কংগ্রেসও শেষ পর্যন্ত প্রার্থী দিলে ওই একটি আসনেই ভোট হবে। তৃণমূলের তালিকা অনুযায়ী প্রথম তিন জন মিঠুন, যোগেন ও কে ডি-র রাজ্যসভায় যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা।
এর মধ্যে তৃণমূলের এ বারের তালিকায় এক মাত্র ‘রাজনৈতিক’ মুখ কে ডি। অন্য দলের হয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে রাজ্যসভায় গিয়ে তিনি পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে তাঁর এখনও দেড় বছর বাকি আছে। পরের বার অবশ্য তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে তাঁর ঝাড়খণ্ড থেকে জিতে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এই অবস্থায় তৃণমূল মেয়াদ ফুরোনোর আগেই তাঁকে এ রাজ্য থেকে প্রার্থী করতে চলেছে। মুকুলবাবুর ব্যাখ্যা, “কে ডি বাংলার জন্য অনেক কাজ করেন। তাই তাঁকে বাংলা থেকেই রাজ্যসভায় পাঠাতে চাই। তিনি ঝাড়খণ্ডের সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে বাংলা থেকে প্রার্থী হবেন। তাঁর জায়গায় ঝাড়খণ্ডেরই কেউ রাজ্যসভায় যেতে পারবেন।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের তহবিল সামলানোয় বড় ভূমিকা পালন করেন ব্যবসায়ী কে ডি। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূল যে এখন ভিন্ রাজ্যে সংগঠনের প্রসার ঘটাতে চাইছে, সেখানেও কে ডি-র ওই ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দলে তাঁর গুরুত্ব বিচার করেই ঝাড়খণ্ডের মেয়াদ ফুরোনোর আগেই তাঁকে আরও ৬ বছরের জন্য রাজ্যসভায় নিশ্চিত করে দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক কালে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তাতে কে ডি-র নাম জড়িয়ে বিতর্ক হলেও দল তাঁকে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে। তার জন্য আপাতত একটি আসনের ‘ক্ষতি’ও স্বীকার করে নিচ্ছে তৃণমূল। আপাতত কে ডি ঝাড়খণ্ডেই থেকে গেলে এ রাজ্য থেকে অন্য আর এক জনকে রাজ্যসভায় পাঠাতে পারত তৃণমূল।
সরাসরি রাজনীতির পরিসরের বাইরে থেকে রাজ্যসভা নির্বাচনে আগেও প্রার্থী করেছেন মমতা। তাঁর দলের সাংসদ ও বিধায়ক হিসেবে টলিউড তারকাদেরও দেখা গিয়েছে। তবু রাজ্যসভার প্রার্থী তালিকায় এ বার মিঠুনের নাম নিঃসন্দেহে বড় চমক। তার সঙ্গেই যোগ হচ্ছে যোগেনের নাম। রাজ্যসভার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে চিকিৎসক, শিক্ষক, অর্থনীতিবিদদের নাম নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে চর্চা চলছিল। শেষ পর্যন্ত সব জল্পনা পিছনে ফেলে তৃণমূল নেত্রীর আস্থা জিতে নিয়েছেন যোগেন। পরিবর্তনকামী বিদ্বজ্জনেদের মধ্যে যাঁকে আগেই দেখা গিয়েছে। এ দিন রাজ্যসভার টিকিট পাওয়ার খবরে আপ্লুত এই শিল্পীর মন্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় আমি সামিল হতে চাই।” মমতা এর আগে ক্যুইজ মাস্টার ডেরেক ও’ব্রায়েনকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছেন। একই ভাবে বাংলা, হিন্দি ও উর্দু সংবাদপত্র থেকে তিন জনকে সংসদের উচ্চ কক্ষের টিকিট দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম সাংসদ কুণাল ঘোষ সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে এখন জেলে। কুণাল-পর্বের সময়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেত্রীকে এক সময়ে বলতে শোনা গিয়েছিল, সংবাদমাধ্যমের আর কাউকে তিনি প্রার্থী করবেন না। কার্যক্ষেত্রে অবশ্য সংবাদমাধ্যমেরই ইমরান প্রার্থী হলেন। তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, পঞ্চম আসনের জন্য ভোটাভুটি অনিবার্য হয়ে পড়লে সংখ্যালঘু প্রার্থী শাসক দলের পক্ষে সুবিধাজনক হতে পারেন।
এআইসিসি অধিবেশন ফেরত প্রদেশ কংগ্রেস শিবিরেও রাজ্যসভার একটি আসনের জন্য প্রার্থী দেওয়ার তৎপরতা চলছে। কংগ্রেসের একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, পঞ্চম আসনে তৃণমূলের প্রার্থী ইমরানকে সমর্থন করা সম্ভব নয়। তার চেয়ে নির্দল কোনও প্রার্থী সামনে আনতে পারলে বামেদের উদ্বৃত্ত ভোট যোগ করে তাঁকে জেতানো সম্ভব। সেই বিচারে ৬ বছর আগের সূত্র মেনে সৈয়দ আহমেদ মালিহাবাদীই ‘নিরাপদ বাছাই’ হতে পারেন বলে কংগ্রেসের একাংশের অভিমত। বাম-কংগ্রেস মিলিত ভোটেই মালিহাবাদী সাংসদ হন। আব্দুল মান্নান, শুভঙ্কর সরকার, মইনুল হকের মতো একাধিক নাম প্রার্থী-পদে ইচ্ছুক হিসেবে কংগ্রেসের অন্দরে ঘোরাফেরা করছে। |
পুরনো খবর: এ বার সাংসদ মিঠুন, সৌজন্যে মমতা |
|
|
 |
|
|