বাগুইআটির দেশবন্ধুনগরে সুনীল চাকী নামে এক বৃদ্ধের বাড়িতে ঢুকে নলি কেটে খুন করে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। দিনেদুপুরে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছিল এলাকার নিরাপত্তা নিয়েও। প্রায় তিন মাস পরে সেই খুনের কিনারা করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সুনীল চাকী নামে ওই বৃদ্ধকে খুনের অভিযোগে অনিমেষ ব্যাপারী ও প্রদীপ মণ্ডল নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ধৃত দুই যুবক জেরায় দোষ স্বীকার করেছে।
স্ত্রী ও ছেলে কাজে বেরিয়ে গেলে দুপুরে একাই থাকতেন বছর সত্তরের সুনীলবাবু। গত বছরের ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় সুনীলবাবুর স্ত্রী নূপুর চাকী অফিস থেকে ফিরে দেখেন, তাঁর স্বামীকে কেউ খুন করে গিয়েছে। খোয়া গিয়েছে একটা ক্যামেরা ও সোনার গয়না। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মূল দরজার চাবি খুলেই আততায়ীরা ঢুকেছিল। প্রশ্ন ওঠে, আততায়ী কি পরিচিত ছিল সুনীলবাবুর? কারণ, সুনীলবাবুদের দরজার চাবি ও সেটির ডুপ্লিকেট পাওয়া যাচ্ছিল না।
অনিমেষকে শনিবার রাতে পুলিশ ধরে নিউ টাউন থেকে। প্রদীপকে ধরা হয় রামকৃষ্ণপল্লি থেকে। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, অনিমেষ মাস দুই আগে সুনীলবাবুর বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এসেছিল। প্রদীপ অবশ্য অনিমেষের বন্ধু পরিচয় দিয়ে ঘটনার দিন ঘরে ঢোকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন প্রথমে অনিমেষ ও প্রদীপ সুনীলবাবুদের বাড়িতে যায়। সুনীলবাবু উপর থেকে চাবি ছুড়ে দেন। সেই চাবি খুলে ঢুকে সুনীলবাবুর সঙ্গে মিনিট পনেরো গল্প করে তারা। চলে আসার আগে সুনীলবাবুদের ফ্রিজের উপর রাখা ডুপ্লিকেট চাবি নিয়ে নেয় অনিমেষ। ফের তারা মিনিট পনেরো পরে ফিরে আসে। এ বার গোপনে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘরে ঢুকে পড়ে। তারা জানত দুপুরে সুনীলবাবু ঘুমোচ্ছেন। এই সুযোগে একটি ঘরের আলমারি থেকে সোনার গয়না হাতায়। সুনীলবাবুর ঘরে ঢুকে আলমারি খুলতেই তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। সুনীলবাবু তাদের চিনে ফেলায় তারা ঘাবড়ে গিয়ে প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে সুনীলবাবুর মাথায় মারে। তার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে নলি কেটে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় অনিমেষ বলেছে, খুনের উদ্দেশ্যে তারা আসেনি। সুনীলবাবুর ঘুম ভেঙে যাওয়ায় তারা ঘাবড়ে গিয়েছিল। বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসিপি সন্তোষ নিম্বলকর বলেন, “অনিমেষ এর আগেও চুরির অভিযোগে ধরা পড়েছিল। বিশেষ কয়েকটি সূত্র ধরে ওই দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের এ দিন বারাসত আদালত ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছে। |