ন্যাশনালে হামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর পলাতক
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভাঙচুর ও পুলিশকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর গুলজার জিয়ার খোঁজে তল্লাশি শুরু করল পুলিশ। শনিবার রাতেই ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত কাউন্সিলরের ছেলে সব্বর আলমকে। পরে রবিবার সকালে গ্রেফতার করা হয় সব্বরের সহযোগী এরশাদকে। রবিবার দু’জনকে শিয়ালদহ আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁদের এক দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। হাসপাতাল চত্বরে বহিরাগত ঠেকাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি পুলিশকেও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে। সেই অনুযায়ী দফায় দফায় ন্যাশনালে পুলিশি টহল চলছে।
ন্যাশনালের সুপার পার্থ প্রধান জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটছে। বহিরাগতদের ঠেকানো না গেলে ডাক্তাররাও এর পরে কাজ বন্ধ করে দিতে পারেন।
শনিবারের হামলার পরে ন্যাশনাল চত্বর। —ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক রং না দেখেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে শনিবারের ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশও এই ব্যাপারে তৎপর ভূমিকা নিলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারাও। তাঁদের বক্তব্য, হাসপাতালকে ইদানীং হামলার সহজ লক্ষ্য বলে মনে করা হচ্ছে। আর বহু ক্ষেত্রেই তার মদত দিচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “এমন ঘটনা ঘটালে অভিযুক্তের মাথায় প্রশাসনের হাত থাকবে না এটা নিশ্চিত করা দরকার। তা হলেই ভবিষ্যতে এটা ঠেকানো সম্ভব।”
বিভিন্ন হাসপাতালের কর্তাদের চলতি মাসেই স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠকে ডাকা হচ্ছে। সেখানেই হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে।
পুলিশ জানায়, শনিবারের ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ডিউটিতে থাকা এক মহিলা হোমগার্ড ওই কাউন্সিলর এবং তাঁর ছেলে-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মারধর এবং সরকারি কর্মীদের কাজে বাধাদানের অভিযোগ দায়ের করেন বেনিয়াপুকুর থানায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেও ভাঙচুরের একটি অভিযোগ করা হয় পুলিশের কাছে। তার ভিত্তিতেই ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর গুলজারের নাম জড়িয়ে গিয়েছে ওই ঘটনায়।
পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের নেতৃত্বে সে দিন হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ভাঙচুর করা হয়েছিল পুলিশ ফাঁড়িও। অভিযোগ, ওই কাউন্সিলরই ওখানে জড়ো হওয়া লোকজনকে তাতাচ্ছিলেন। ওই কাউন্সিলরের ছেলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। তবে পুলিশকে মারধরের ঘটনার সঙ্গে ওই কাউন্সিলর সরাসরি যুক্ত কি না সে ব্যাপারে এ দিন রাত পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় আরও ২০-২৫ জন যুক্ত। হাসপাতালে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ দেখেই বাকি অভিযুক্তদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। অভিযুক্তরা বেশিরভাগই কাউন্সিলরের পরিচিত বলেই তদন্তকারীদের দাবি। গুলজারের পাশাপাশি তাদেরও খোঁজ শুরু হয়েছে।
ঘটনার পরে রাস্তা অবরোধের জন্য পাঁচ জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। পরে ওই অভিযুক্তদের জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার পরেই পুলিশের একাংশ অভিযোগ করেন, ঘটনার পর কাউন্সিলর জিয়া দলবল নিয়ে নিজে থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের ছাড়ার জন্য পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। পুলিশ জানিয়েছে, এর পরই আহত পুলিশকর্মীদের পক্ষ থেকে থানায় ওই কাউন্সিলর-সহ আরও কয়েক জনের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়। অভিযোগ করা হয় হাসপাতালের পক্ষ থেকেও।
রাত থেকেই গুলজার জিয়া বাড়ি ফেরেননি বলে পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছে। তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.