ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, গোলমাল, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে শনিবারও উত্তেজনা ছিল উত্তরবঙ্গের কলেজগুলিতে। মনোনয়ন পত্র তুললেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মালদহের গৌড় কলেজে ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআই সমর্থকরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ। কলেজে দু পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে ভোট শেষ হওয়ার পরে গণনা নিয়ে মাঝরাত পর্যন্ত গোলমাল চলেছে জলপাইগুড়ির প্রসন্ন দেব মহিলা (পিডি) কলেজে। রাত দেড়টা পর্যন্ত কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে জোর করে ২০টি আসনে জেতার কথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ লিখিয়ে নিয়েছে বলে এসএফআইয়ের অভিযোগ। শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের সুবিধে পাইয়ে দিতে দাবি মেনে ফল ঘোষণা না করে প্রশাসনের থেকে ব্যালট বাক্সগুলি নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে এসএফআইয়ের দাবি।
এ দিন মালদহের গৌড় কলেজে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল। দুপুরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে ছাত্র পরিষদ ও এসএফআইয়ে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশের সামনেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকরা বাঁশ লাঠি দিয়ে ছাত্র পরিষদ ও এসএফআই সমর্থকদের বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পরে মঙ্গলবাড়ি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র পরিষদ ও এসএফআইয়ের সমর্থকরা। তবে দুই সংগঠনের পক্ষ থেকেই মনোনয়ন জমা দিতে না পারায় কলেজের ৩৪টি আসনেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়। মালদহের কংগ্রেস বিধায়ক ভূপেন্দ্র নাথ হালদার বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকরা আমাদের প্রার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষের কাছে নতুন করে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানানো হয়েছে।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস পাল্টা বলেন, “আমাদের সমর্থকদেরই হামলার মুখে পড়তে হয়েছে। ওদের সংগঠন নেই বলে প্রার্থী দিতে পারেনি।”
অন্যদিকে, ছাত্র সংসদের নির্বাচন স্থগিত রাখার সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য মালদহের সামসি কলেজ বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। শনিবার কলেজের তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। শুক্রবার মনোনয়ন তোলাকে কেন্দ্র করে বোমাবাজির পাশাপাশি গুলিও চলে বলে অভিযোগ ওঠে। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি বলেন, “কবে কলেজ খোলা হবে তা পরিচালন সমিতি বসে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে।” কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হামলার অভিযোগ তুলে শনিবার বিকালে প্রতিবাদ সভাও করেছে বামফ্রন্ট। উপস্থিত ছিলেন মালতিপুরের আরএসপি বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি ও হবিবপুরের সিপিএম বিধায়ক খগেন মুর্মু সহ ডিওয়াইএফ ও এসএফআই নেতারাও। রতুয়া-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুল হক বলেন, “এসএফআইয়ের হয়ে বামেরাই হামলা চালিয়েছে। হামলার পরে এখন ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” |