সাংবাদিক নিগ্রহের সময়ে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশ
মাজদিয়া সুধীরঞ্জন লাহিড়ী কলেজে শুক্রবার সাংবাদিক নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি’র বিরুদ্ধে। শনিবার মাজদিয়া জুড়ে সেই উত্তেজনাই ছড়িয়ে রাখল শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের মোটর বাইকে ঘন ঘন চক্কর, চাপা হুমকি আর চোখ রাঙানো।
এ দিন কলেজ চত্বর ছিল সুনসান। তবে আশপাশের বাসিন্দারা মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। তাঁদেরই কয়েক জন সন্ত্রস্ত মুখে বলেন, “কথা বলা বারণ। না হলে আমরাও হামলার শিকার হব।”
নদিয়ার মাজদিয়া সুধীরঞ্জন লাহিড়ী কলেজের ছাত্র সংসদ ছিল এসএফআইয়ের দখলে। গত বছর সেখানে নির্বাচনই হয়নি। এ বছর সে কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হতেই উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। শুক্রবার ছিল মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। দুপুর থেকে তা নিয়েই শুরু হয়েছিল এসএফআই এবং টিএমসিপি’র পারস্পারিক চোখ রাঙানো। যা ক্রমে হাতাহাতি এবং বোমা-বৃষ্টিতে গড়িয়েছিল। সেই রণক্ষেত্রের ছবি তুলতে গিয়েছিলেন আলোকচিত্রীরা। আর ঘটনাচক্রে দলীয় পতাকা নিয়ে হামলা করা তৃণমূল সমর্থক এবং টিএমসিপি’র কয়েকশো কর্মীর সামনে পড়ে গিয়েছিলেন।
তাঁদের অভিযোগ, বাঁশ পেটা থেকে কিল, চড়, লাথি বাদ যায়নি কিছুই। ঘটনার সময়ে পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল ফুট কয়েকের মধ্যেই। ওই আলোকচিত্রীদের অভিযোগ, উদ্ধার করতে এগিয়ে আসা তো দূরে থাক, বরং চাপড়া থানার ওসি রক্তিম চট্ট্যোপাধ্যায় মুখ ঘুরিয়ে না দেখার ভান করেছিলেন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের অভিজ্ঞতা বলছে--পুরুষ্ঠ বাঁশ, খেটো লাঠি অনেকের হাতে শান দেওয়া হাঁসুয়া। দু-এক জনের হাতে সাবধানে ধরে থাকা চটের থলি। ভিড় থেকে তাদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা উড়ে যাচ্ছিল প্রায়ই, ‘‘সাবধানে ধরিস ...ফেটে না যায়।’’ পুলিশকর্মীদের দু-এক জন জানিয়েছিলেন, ওতে বোমা আছে। আচমকা, “এই ছবি তুলছে...মেরে ফেল ওদের”, বলে তাঁদের উপরে মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ওই সমর্থকেরা। তারপর শুরু হয়েছিল বাঁশ-পেটা। প্রাণভয়ে তাঁরা ছুটেছিলেন কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীদের দিকে। কিন্তু এগিয়ে এসে শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের হাত থেকে তাঁদের বাঁচানো দূরে থাক, ওই পুলিশকর্মীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। আক্রান্ত ওই সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের এক জন বলেন, “শেষ পর্যন্ত আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন শাসক দলেরই দু-এক জন কর্মী। তাঁরাই মারমুখী কর্মীদের কাছ থেকে আমাদের সরিয়ে নিয়ে গিয়ে পরামর্শ দেন, ‘পালিয়ে যান।” এ দিন, টিএমসিপি’র জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত বলেন, “আমাদের সংগঠন এমন ঘটনা সমর্থন করে না। যারা এ কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে।”
কিন্তু রক্তিমবাবু সব দেখেও কেন এগিয়ে যাননি? এ ব্যাপারে ওই পুলিশ কর্তার জবাব, “কোনও মন্তব্য নয়।” তবে ঘটনাস্থলে ওই দিন উপস্থিত ছিলেন নদিয়ার ডিএসপি (সদর) দিব্যজ্যোতি দাস। তিনি বলেন, “এমন বোমাবাজি চলছিল যে সাংবাদিকেরা আক্রন্ত হয়েছেন কি না দেখার উপায় ছিল না। সাংবাদিকদের আলাদা করে দেখার সুযোগ ছিল না। তবে অভিযোগ জানালে নিশ্চয় ব্যবস্থা নিতাম।”
জেলা সিপিএমের অভিযোগ, সাংবাদিক পিটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি তৃণমূল। রাতে এসএফআই সমর্থক প্রণব ঘোষের বাড়িতে চড়াও হয় তারা। বাড়িতে সে সময়ে ছিলেন তার মা সতীদেবী। অভিযোগ, তৃণমূল সমর্থকরা বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.