রাজ্যে ডায়ালিসিস পরিষেবা বাড়াতে উদ্যোগী সরকার
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে রাজ্যে ডায়ালিসিস পরিষেবা ঢেলে সাজাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। মার্চের মধ্যেই কলকাতার তিনটি হাসপাতালে শুরু হচ্ছে পরিষেবা। এগুলি হল কলকাতা মেডিক্যাল, ন্যাশনাল মেডিক্যাল ও এম আর বাঙুর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। আপাতত চলছে জলের পরিশোধন ও নিরবচ্ছিন্ন জল সরবরাহ সংক্রান্ত কাজ।
উত্তরবঙ্গ, বর্ধমান, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, এন আর এস, এস এস কে এম, শম্ভুনাথ, আর জি করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আগেই ছিল এই পরিষেবা। হাওড়া স্টেট জেনারেল, বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল, বেলেঘাটা আই ডি, সাগর দত্ত, বি এন বসু, উলুবেড়িয়া, বারাসত, বসিরহাট-সহ রাজ্যের ৩৪টি জায়গায় শুরু হবে ডায়ালিসিস ইউনিট। বসানো হবে ২৫০টি নতুন মেশিন।
ইউনিটগুলির পরিচালনায় সরকার সংস্থার সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করবে। খরচ ঠিক করবে সরকার। এই মুহূর্তে সরকারি খরচে ডায়ালিসিস করতে প্রতি বার ৫০০ টাকা খরচ হয়। এ ছাড়াও রয়েছে ওষুধপত্রের দাম। সব মিলিয়ে প্রতি বার ন্যূনতম সাড়ে সাতশো টাকার মতো খরচ। বেসরকারি হাসপাতালে এই অঙ্কটাই দাঁড়ায় তিন থেকে চার হাজার টাকা। কোথাও তারও বেশি।
বেশি হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার খবরে খুশি সাধারণ মানুষ। পিজি-তে ডায়ালিসিস করাতে আসা সমীরণ পোড়ে বলেন, “বারাসত থেকে আসতে সমস্যা হয়। ঘরের কাছে হলে তো অবশ্যই সুবিধা। এর জন্য সরকারকে ধন্যবাদ।” তবে ঘোষণা সত্ত্বেও বিল্ডিং পরিকাঠামোয় পিছিয়ে থাকায় আপাতত ডায়ালিসিস ইউনিট শুরু করতে পারছে না সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ। স্বাস্থ্য দফতরের আশ্বাস, অন্য জায়গাতেও ধীরে ধীরে শুরু হবে পরিষেবা।
সরকারি স্তরে পরিষেবা ছড়াচ্ছে ঠিকই। তা সত্ত্বেও সাধারণের নাগালে এই পরিষেবা আনতে দু’টি বাধা রয়েই গিয়েছে মানছেন চিকিৎসক থেকে রোগী। প্রথমত, ন্যায্য মূল্যের দোকানে এখনও ডায়ালিসিসের সব ওষুধ মেলে না। দ্বিতীয়ত, একমাত্র এস এস কে এম ছাড়া কোথাও ডায়ালিসিসের ২৪ ঘণ্টার সরকারি পরিষেবা নেই।
ন্যায্য মূল্যের দোকানে না থাকায় ডবল লুমেন কার্ভ ক্যাথিটার ও ডায়ালিসিস ফ্লুইড বাইরে থেকে কিনতে খরচ পড়ে প্রায় চার হাজার টাকা। পিজি-র নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান রাজেন পাণ্ডে বলেন, “বিদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাকে ভারতে পাইকারি দর নির্ধারণের জন্য আবেদন করতে হয়। তা না থাকলে ছাড় দেওয়া যায় না। সে কারণেই এই জাতীয় কিছু ওষুধ ন্যায্য মূল্যের দোকানে এখনও আনা যায়নি। চেষ্টা চলছে দ্রুত আনানোর।”
চিকিৎসকদের মতে, অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি (এ কে আই) ও ক্রনিক রেনাল ফেলিওর (সি আর এফ)-এর ক্ষেত্রে প্রয়োজন ডায়ালিসিসের। সাপের কামড়, বিষক্রিয়া, ব্রেন ম্যালেরিয়া, সিজার পরবর্তী কিছু ক্ষেত্রে কিডনিজনিত সমস্যা হলে ডায়ালিসিস করতে হয়। আর জি করের ডায়ালিসিস বিভাগের প্রধান স্বপনকুমার মণ্ডল বলেন, “ডে-কেয়ারের ইউনিট থাকায় সব রোগীকে পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। এ কে আই রোগীদের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই আগে তাঁদের ডায়ালিসিস দেওয়া হয়। সি আর এফ রোগীদের ক্ষেত্রে ডায়ালিসিস দিতে হলে হাসপাতালে ভর্তি থাকা সুবিধাজনক।”
আর জি কর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, নেফ্রোলজি ইউনিট না থাকায় ডায়ালিসিসের জন্য রোগীকে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হতে হয়। ফলে চিকিৎসা শুরু হতে সময় লাগে। সমস্যায় পড়েন সঙ্কটজনক রোগীরা। রাজেনবাবুর কথায়, “চিকিৎসকের অভাব থাকায় হয় সব হাসপাতালে নেফ্রোলজির ইউনিট নেই, বা যথেষ্ট সংখ্যক নেফ্রোলজিস্ট নেই। এটাই ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা শুরু করতে না পারার অন্যতম কারণ।” তাঁর আশ্বাস, “শুরুতে সমস্যা থাকলেও দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”

স্বাস্থ্যবিমা চালু
রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনা চালু হল খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। শুক্রবার হাসপাতালের রোগী সহায়তা কেন্দ্রের পাশে এই পরিষেবার কাউন্টার চালু হয়। হাসপাতালের সুপার দেবাশিস পাল বলেন, “বিমার আওতায় থাকা বিপিএল রোগীরা কার্ড দেখিয়ে নিখরচায় চিকিৎসা করাতে পারবেন। আমরা বিমা সংস্থার কাছ থেকে চিকিৎসার খরচ পেয়ে যাব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.