বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পিকনিক বেআইনি। এ নিয়ে নানা এলাকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া রয়েছে। তবু বনকর্মীদের একাংশের গাফিলতির জেরে বনাঞ্চলেই পিকনিকের আসর বসছে। বন দফতরের অনেকে জানান, বক্সার যা আয়তন, সেই অনুযায়ী বনকর্মী নেই। সে জন্য সর্বত্র সমান ভাবে নজরদারি করাা যায় না বলে বন অফিসারদের একাংশ জানিয়েছেন। তা ছাড়া পিকনিকে বাধা দিলে অনেক সময়ে বনকর্মীর উপরে হামলার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। উপরন্তু, আগুন জ্বালিয়ে রান্নার ফলে বড় বিপদ ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা বনকর্মীদের।
শীতে, পিকনিকের মরসুমে বক্সায় গড়ে শতাধিক দল পিকনিক করে বলে অভিযোগ। দিনভর মাইক বাজানো, জঞ্জাল ফেলে চলে যাওয়ার ঘটনাও রোজ ঘটছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা ভাস্কর জেভি বলেন, “সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভিতর আগুন জ্বেলে মাইক বাজিয়ে পিকনিক করা নিষিদ্ধ। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে রয়েছে প্রায় ৭ হেক্টর সংরক্ষিত বন। সেখানে শুকনো পাতা ছড়িয়ে। আগুন লাগার সম্ভাবনাও রয়েছে। আগুন লাগলে বন দফতরের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না। শামুকতলা থানার ও সি দীপঙ্কর সাহা বলেন, “বন দফতর পিকনিক নিয়ে আমাদের অভিযোগ জানায়নি। জানালে ব্যবস্থা নেব।” |
বক্সার কোর এলাকা ভুটানঘাটে পড়ে মদের বোতল, প্লাস্টিকের থালা-গ্লাস। |
কিছু স্কুল ও টিউটোরিয়াল হোম ছাড়াও পারিবারিক ভাবে ওখানে দল বেঁধে পিকনিক করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বন দফতরের পক্ষ থেকে নজরদারি না চালানোয় ভেতরে বনভোজন চলে। সম্প্রতি ফাঁসখোয়ায় পিকনিক করতে এসেছিলেন অসমের ধুবরি এলাকার বাবুল দাস, তাঁর বন্ধুরা। তাঁরা বলেন, “অনেকেই বনের মধ্যে রান্না করছে। তা দেখে আমরা এলাম। কেউ বলেনি এখানে বনভোজন করা যাবে না।” এক বন কর্মী জানান, পিকনিক করতে যাঁরা যান, তাঁদের একাংশ মদ খেয়ে অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করেন। ওই বনকর্মীর অভিযোগ, প্রতিবাদ করলে পিকনিক-পার্টি হাতে খুন্তি-শাবল নিয়ে তাড়া করেছে এমন ঘটনাও ঘটেছে।
আলিপুরদুয়ার রোভার্স ও মাউন্টেনিয়ার্স ক্লাবের সম্পাদক সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এ ভাবে পিকনিক করা কাম্য নয়। অবিলম্বে এ সব বন্ধ হওয়া জরুরি বলে তিনি মনে করেন। বন দফতরের কর্তাদের মতেও, বনের আগুন জ্বেলে পিকনিকের বহরে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বন দফতরে এক আধিকারিক জানান, এটা দীর্ঘ দিনের সমস্যা। সচেতনতার জন্য বনের চার পাশে যে বোর্ড লাগানো হয় সে সব চুরি হয়েছে। তা ছাড়া বন দফতরের কর্মীদের সংখ্যা কম, ফলে নজরদারি চালানোও কঠিন। বনকর্মীদের বিষয়টি থানায় লিখিত জানাতে বলা হয়েছে।
|
জঙ্গলে ফেরানোর পরে মৃত্যু হল একটি বাইসনের। বৃহস্পতি বার গরুমারা জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন কুমলাই-এর খোয়ার মোড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়া বাইসনটিকে বনকর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলিতে অজ্ঞান করে গরুমারায় নিয়ে যান। জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার পরে সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাইসনটির মৃত্যু হয়। |