মরসুমী চাষের সমস্যা ও সম্ভাবনা কেমন? নির্দিষ্ট চাষের পদ্ধতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চান? জানতে চান প্রত্যন্ত এলাকায় তাক লাগিয়ে দেওয়া কোনও এক চাষির সাফল্যের রসায়ন? এ সব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েই ‘উত্তরের কৃষি-কথা’ মরসুমভিত্তিক কৃষি সম্পর্কিত পত্রিকাকে হাতিয়ার করে এই বার উত্তরবঙ্গের কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে প্রথম বার এমন একটি কৃষি-পত্রিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উন্নত চাষের আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে চাষিদের পরামর্শ দেওয়াই শুধু নয়, তাদের প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরা। সাফল্যের ঘটনা লিখে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করার মতো একাধিক ভাবনা থেকেই ‘উত্তরের কৃষি-কথা’কে আমরা কাজে লাগাতে চাইছি। এমন উদ্যোগ আগে নেওয়া হলে আরও ভাল হত।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নভেম্বরে ‘উত্তরের কৃষিকথা’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হয়। রবি মরসুমের ওই সংখ্যায় বোরো ধান চাষের নতুন প্রযুক্তি সৌমেন মৈত্র বিশেষ প্রবন্ধ লিখেছেন। উত্তরবঙ্গের জলবায়ুর কথা চিন্তা করে শীতকালীন সব্জি চাষের বিশেষ সতর্কতা, আলুর ধসা দমন ব্যবস্থা, রসুন চাষের তথ্য, আমবাগানের পরিচর্যার মতো বিষয়ও পত্রিকায় তুলে ধরা হয়েছে। রয়েছে নানা শত্রু পোকার তালিকা থেকে তা নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়ে নানা কথা। পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলী সদস্য প্রভাত পাল বলেন, “প্রথম সংখ্যার প্রায় ছয় হাজার কপি পত্রিকা নানা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, কৃষি আধিকারিক, ফার্মার্স ক্লাবের মাধ্যমে সাধারণ চাষিদের হাতে পৌঁছে দিয়েছি। ইতিমধ্যে ভাল সাড়া মিলছে। আগামী মরসুমের চাষ নিয়ে নানা প্রশ্ন লিখে বেশ কিছু চিঠি আসায় উৎসাহটা আরও বেড়েছে।”
খরিফ আর প্রাক্ খরিফ মরসুম মিলিয়ে বছরে তিনটি মরসুম-ভিত্তিক পত্রিকা প্রকাশের পরিকল্পনা হয়েছে। পত্রিকা কমিটির এক সদস্য বলেন, “কোচবিহারে পান চাষের সমস্যা নিয়ে এক চাষি চিঠি দিয়েছেন। ওই প্রশ্নটা আরও অনেকেরই যে রয়েছে তা আমরা জানি। আগামী সংখ্যায় ওই বিষয়টিতে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই।” সাতমাইল সতীশ ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমাদের তদারকিতে ৩০০-র বেশি ফার্মার্স ক্লাব রয়েছে। অনেককেই ‘উত্তরের কৃষিকথা’র প্রশংসা করছেন। তবে শুধু মরসুমভিত্তিক সংখ্যা প্রকাশ করে তেমন লাভ হবে না। প্রতিমাসে ওই পত্রিকা প্রকাশ করা দরকার।” কোচবিহার জেলা ধান পাট আলু চাষি সংগ্রাম সমিতির সম্পাদক নৃপেন কার্জি বলেছেন, “চাষির অনেকে লেখাপড়া জানে না। তা পড়ায় সমস্যা রয়েছে। কর্মশালা করে পত্রিকার সংখ্যাগুলি নিয়ে আলোচনার ব্যবস্থা হলে আরও বেশি সংখ্যক চাষি উপকৃত হবেন। |