মনোনয়নকে ঘিরে গোলমালের পর আজ, শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলার পাঁচটি কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে। অশান্তি এড়াতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা পুলিশ। অশান্তি এড়াতে কলেজগুলিতে ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি মোতায়েন করা হচ্ছে মহিলা ও সাদা পোশাকে পুলিশ কর্মীদের। জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “কলেজের বাইরে গোলমাল ঠেকাতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহিলা পুলিশও থাকবে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কলেজ চত্বরে ও বাইরে ১৪৪ ধারা থাকবে।”
আজ, শুক্রবার জেলার ১২টি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। বিরোধী সংগঠনের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ধূপগুড়ি, মালবাজার, ময়নাগুড়ি, কামাখ্যাগুড়ি শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজ, বীরপাড়া ও ফালাকাটা কলেজের ছাত্র সংসদ দখল করে নিয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অবশ্য সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। জলপাইগুড়ি কমার্স কলেজ ছাত্র পরিষদের দখলে গিয়েছে। এদিন জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজ, প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয়, আলিপুরদুয়ার কলেজ, বিবেকানন্দ কলেজ ও জয়গাঁ কলেজে ভোট হবে।
আনন্দচন্দ্র কলেজে গত ৭ জানুয়ারি ভাঙচুরের ঘটনা এবং প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গত বুধবার ছাত্র পরিষদ সমর্থক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র অনিক মালো দাস জেলা দায়রা আদালতে মামলা রুজু করেন। আদালতের সিভিল জজ জুনিয়ার ডিভিশনের বিচারক কলেজের অধ্যক্ষকে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কেন বাতিল করা হবে না, তা তিন দিনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ বৃহস্পতিবার বিকেলে কলেজে পৌঁছয়। ঘটনার জেরে কলেজে নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। কলেজের শিক্ষক তথা নির্বাচন পরিচালনায় তৈরি কমিটির সদস্য সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, “আদালত নির্বাচন বন্ধ করার নির্দেশ দেয়নি। তাই বিধি মেনে নির্বাচন হবে।”
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কলেজে অসংবিধানিক ভাবে নির্বাচন করার অভিযোগ তুলে এ দিন ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকরা শহরে মিছিল করেন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের স্মারকলিপি দেন। জেলা কংগ্রেসের ছাত্র-যুব কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শুভেন্দু বসু বলেন, “তৃণমূলের সমর্থকরা বহিরাগতদের নিয়ে ভাঙচুর, মারধর করে ছাত্র পরিষদকে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি। তা পরোক্ষে স্বীকার করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। এর পরে কী করে নির্বাচন হয়? অনৈতিক কাজকর্ম হচ্ছে।” কর্তৃপক্ষ মুখ খোলেননি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, “হামলা, গোলমাল হলে তো এসএফআই মনোনয়ন দিতে পারত না।”
আলিপুরদুয়ার কলেজে ৪৯টি আসনের মধ্যে মাত্র ৮টি আসনে নির্বাচন হবে। বাকি আসনগুলি আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ দখল করেছে। একই ভাবে বিবেকানন্দ কলেজের ২৯টি আসনের মধ্যে ১৯টিতে নির্বাচন হবে। |