গ্রামে বিদ্যুৎ দিতে আরও ছ’শো কোটি পেল রাজ্য
শ্চিমবঙ্গে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্প খাতে আরও ছ’শো কোটিরও বেশি টাকা মঞ্জুর করল কেন্দ্র। রাজ্যের সাতটি জেলার সব গ্রামের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার যে কাজ চলছে, এই অর্থের সাহায্যে তার আওতায় দারিদ্রসীমার নীচের (বিপিএল) আরও প্রায় আড়াই লক্ষ পরিবারকে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য সরকার। ওখানে দারিদ্রসীমার উপরের (এপিএল) পরিবারগুলোকে বিদ্যুৎ সংযোগ জোগানোর বাড়তি খরচ অবশ্য রাজ্য নিজেই বহন করবে।
রাজ্যের বিদ্যুৎ-সচিব গোপালকৃষ্ণ বলেন, “২০১৬-র মার্চের মধ্যে ওই সমস্ত জেলার প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ পোঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিপিএলের জন্য কেন্দ্র যে টাকা মঞ্জুর করেছে, তার বাইরে এপিএলের জন্য আরও দু’শো-আড়াইশো কোটি লাগবে। তার সংস্থান আমরা নিজেরাই করব।” প্রসঙ্গত, আড়াই বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে নতুন সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, গ্রামে-গঞ্জের প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে। ‘সবার ঘরে আলো’ স্লোগান তুলেছিল মমতার সরকার।
এবং সরকারের সেই স্লোগান মেনেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এখন গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের পর্ব যত দ্রুত সম্ভব শেষ করে ফেলতে চাইছে। রাজ্যে প্রকল্পটি রূপায়ণের নোডাল এজেন্সি তারাই। বিদ্যুৎ-কর্তাদের দাবি: বাম আমলে প্রকল্প তেমন গতি না-পেলেও নতুন জমানায় এই মুহূর্তে সব জেলায় জোরকদমে কাজ চলছে। এতে বণ্টন সংস্থার গ্রাহকসংখ্যা ইতিমধ্যেই আড়াই কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। সামগ্রিক ভাবে এই সাফল্যের সুবাদেই সাতটা জেলার জন্য কেন্দ্র আরও ৬১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে দাবি করেছেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা। ওঁদের এক জনের কথায়, “ঠিক ছিল, ২০১৪-র মধ্যে এ রাজ্যে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন সেরে ফেলা হবে। কিন্তু কয়েকটি জেলায় নানা কারণে কাজ পিছিয়ে গিয়েছে। এখন আমাদের সময়সীমা ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ।”
বস্তুত গ্রামের মানুষকে বিদ্যুৎ পরিষেবা জোগানোর উদ্যোগে তিনি যে কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত করবেন না, মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তা জানিয়ে দিয়েছেন। নবান্নের খবর: পিছিয়ে থাকা ১১টি জেলার পাঁচটিতে (উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া) গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রক্রিয়ার শম্বুক গতি নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেন মমতা। আর তার পরেই পাঁচ জেলায় প্রকল্প দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে নিয়োগ করা হয়েছে দু’টি বেসরকারি সংস্থাকে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো ও টেকনোফ্যাব ইঞ্জিনিয়ারিং। রাজ্য মন্ত্রিসভার সর্বশেষ বৈঠকে তাদের নিয়োগ-প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। দু’টিতে মিলে পাঁচ জেলায় বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের প্রায় আড়াইশো কোটি টাকার কাজ করবে। শেষ করতে হবে ২০১৫-র জানুয়ারির মধ্যে।
এ দিকে প্রকল্পের সাফল্যের পাশাপাশি কিছু সমস্যাও দেখা দিয়েছে। কী রকম?
বণ্টন-সূত্রের খবর: গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের হার যত বাড়ছে, তেমন বিদ্যুৎ চুরিও বাড়ছে। বহু গ্রাহক যেমন বিল মেটাচ্ছেন না, তেমন অনেকে হাতের কাছে সরকারি বিদ্যুৎ পেয়ে তা চুরি করে শ্যালো পাম্প চালাচ্ছেন। খেসারত দিচ্ছে বণ্টন সংস্থা। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের তথ্য বলছে, বছর শেষে গোটা পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুতের সরবরাহজনিত ক্ষতি গিয়ে দাঁড়াবে গড়ে ২৮%-৩০%। কোনও জেলায় তা ৬০% ছাড়াবে।
এ হেন প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চুরি রোখাটাও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এনার্জি অডিটের মতো নজরদারি পদক্ষেপও চলছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ-কর্তারা।

কোথায় কত
বর্ধমান ১০০.১৩
দার্জিলিং ১৫.২৯
হাওড়া ৩১.৭৬
হুগলি ১৪.১৮
কোচবিহার ৬০.৩৮
নদিয়া ১১০.৬৩
উঃ ২৪ পরগনা ২৭৭.২৪
*অঙ্ক কোটি টাকায়



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.