হাসপাতালে আর থাকতে চাইছেন না সুচিত্রা সেন। অস্থির হয়ে পড়েছেন বাড়ি ফেরার জন্য। মেয়ে মুনমুন বা নাতনি রিয়া-রাইমাকে তো বটেই, নিজের এই ইচ্ছার কথা তিনি ডাক্তারদেরও জানিয়েছেন। পরবর্তী ধাপের চিকিৎসার ব্যবস্থা যাতে বাড়িতেই করা হয় সে জন্য ডাক্তারদের অনুরোধ করছেন মহানায়িকা। এমনকী বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা না করলে ওষুধ
খাবেন না বলেও মাঝেমধ্যে জেদ করছেন তিনি।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সুচিত্রার অবস্থা আরও খানিকটা স্থিতিশীল হওয়া প্রয়োজন। শুক্রবারও রাইলস টিউবেই খাওয়ানো হয়েছে তাঁকে। বাড়ি পাঠানোর আগে নিজের মুখে খাওয়া শুরু করানোর চেষ্টা চলছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সুচিত্রার বুকে কফ এখনও জমে রয়েছে। কিন্তু বুকের ফিজিওথেরাপি নিতেও তাঁর কষ্ট হচ্ছে বলে এ বার শুধু ওষুধ এবং ইঞ্জেকশনের সাহায্যেই কফ তোলার কথা ভাবা হচ্ছে।
তবে চিকিৎসকদের কাছে এখন প্রধান চিন্তা হল, সুচিত্রার শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা। এন্ডোট্র্যাকিয়াল টিউব খুলে নেওয়ার পরে মাঝে মাঝেই তাঁর রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। তখন আবার আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছেন সুচিত্রা। স্থিতিশীলতাও বিঘ্নিত হচ্ছে। অথচ পুরোদস্তুর ভেন্টিলেশনে রাখার ক্ষেত্রে অসুবিধা রয়েছে। এ দিন সন্ধেবেলায় এমনই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে সাময়িক ভাবে সুচিত্রার জন্য ফের নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। রাতের দিকে ওই ব্যবস্থা চালু করা হয়। এ দিনও সুচিত্রাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
দিন দুয়েক ধরেই রক্ত পরীক্ষার জন্য ছুঁচ ফোটানো এবং খাওয়ার জন্য জোর করা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করছেন সুচিত্রা সেন। কেউ ডাকলেও রেগে যাচ্ছেন। আজ সকাল থেকে বাড়ি ফেরার জন্য ব্যস্ত হন তিনি। দুপুরে হাসপাতালের তরফে দু’টিমাত্র বাক্যে সংক্ষিপ্ত মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করা হয়। এত দিন সুচিত্রার জন্য তৈরি মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের সই করা বুলেটিন দেওয়া হচ্ছিল ও ডাক্তার সুব্রত মৈত্র এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে বুলেটিন নিয়ে কথা বলতেন। এ দিন সাংবাদিকদের সামনে আসেন হাসপাতালের সিইও পি টন্ডন। বুলেটিনেও তাঁরই সই ছিল। বুলেটিনে বলা হয়, সুচিত্রার শারীরিক অবস্থা আগের দিনের মতোই আছে। তাঁর রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন ইত্যাদি স্থিতিশীল রয়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে মধ্য কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ফুসফুসে সংক্রমণের পাশাপাশি তাঁর হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ায় ২৯ ডিসেম্বর রাতে তাঁকে আইটিইউ-এ স্থানান্তরিত করা হয়। |