মশার দৌরাত্ম্যে নাজেহাল বাঁকুড়া পুরবাসী। দিনের আলোতে মশাদের দাপট কিছুটা কম হলেও সন্ধ্যা নামতেই মশাদের আক্রমণ ঠেকানো দায় হয়ে পড়ছে। মশারি, মশা মারার ধূপ ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিলেও বাড়ির বাইরে আর রক্ষা নেই।
এই শীতে চায়ের দোকানে কিংবা পাড়ার মোড়ের আড্ডা কার্যত মাটি হয়ে যাচ্ছে মশার হুলে। নিয়মিত মশা নিধন অভিযান চালানো হচ্ছে বলে বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপা দাবি করলেও পুরবাসীর অভিজ্ঞতা অন্য রকম। তাঁরা উল্টে পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন।
বাঁকুড়া শহরের পাঠকপাড়ার বাসিন্দা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মশার উৎপাত ইদানীং বেড়ে গিয়েছে। সন্ধ্যায় অনেকেই বাড়িতে মশারি খাটাচ্ছেন। হাটে-বাজারে গল্প করতে গেলে মুখেও মশা ঢুকে পড়ছে।” শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিনেমা রোড এলাকার বাসিন্দা শ্যামসুন্দর ভুঁই বলেন, “সন্ধ্যা নামলেই চারপাশে শুধু মশাদের পোঁ পোঁ গুঞ্জন শোনা যায়।” একই অভিযোগ কাটজুড়িডাঙার মিলনপল্লির বাসিন্দা তপন মুখোপাধ্যায়েরও। শহরের প্রায় সর্বত্রই মশার উৎপাত চলছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত নিকাশী নালা ও ঝোপ-জঙ্গল সাফ করলে মশা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সেই সঙ্গে মশা মারার কীটনাশক ছড়ানোও দরকার। পুরসভার ভূমিকায় অসন্তুষ্ট বাসিন্দারা।
বাঁকুড়া পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী শিউলি মিদ্যা দাবি করেছেন, “কোনও সমস্যারই স্থায়ী সমাধান করতে পারছে না তৃণমূল পরিচালিত এই পুরবোর্ড। যখন হুজুগ ওঠে তখন কয়েকদিন লাফালাফি করে কাজে লেগে পড়েন, দু’দিন পরে আবার যে কে সেই। তাই সমস্যারও কোনও স্থায়ী সমাধান এই বোর্ডের কাছে আশা করা যায় না।’ তাঁর দাবি, মশার ডিম মারার ওষুধ কয়েকটি ওয়ার্ডে মাঝে মাঝে স্প্রে করা হচ্ছে। কিন্তু নজরদারির অভাবে কাজগুলি সঠিক ভাবে হচ্ছে না। পুরপ্রধান শম্পা দরিপা অবশ্য দাবি করেছেন, “প্রতিটি ওয়ার্ডে সপ্তাহে নিয়মিত দু’দিন করে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। তাই এতটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়।” |