১০ হাজার হেক্টরে ধসার প্রকোপ, উদ্বিগ্ন আলু চাষিরা
হু হু ছড়াচ্ছে আলুর ধসা রোগ। দিন চারেক আগেও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে ধসা রোগের খবর এসেছিল। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশ হাজার হেক্টর। পরিস্থিতি দেখে জেলা কৃষি দফতরের তরফে মাইকিং, লিফলেট বিলি ছাড়াও খোদ কর্তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে চাষিদের ধসা রোগ সম্পর্কে সচেতন করছেন। উপ-কৃষি অধিকর্তা নিমাইচন্দ্র রায় জানিয়েছেন, “আবহাওয়া পরিষ্কার না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। আমরা ওই রোগ মোকাবিলায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।”
মেঘলা আকাশ, কুয়াশা আর মাঝে মধ্যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টিএই ত্রিফলায় ইতিমধ্যেই বিদ্ধ হয়েছে আলু। ওই আবহাওয়াই অব্যহত হওয়ায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোগের প্রকোপ। এ বার জলদি আলু চাষ করেননি গড়বেতার সঞ্জয় কাঁঠাল। বরাবরের মতো এ বারও তিন বিঘা জমিতে মরসুমি আলু চাষ করেছিলেন। এখন তাঁর গোটা জমিতেই ধসা রোগ থাবা বসিয়েছে।

ধসার প্রকোপ দেখতে গড়বেতায় কৃষি আধিকারিক।
চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের আলু চাষি গয়ারাম ঘোষ বলেন, “চুক্তিতে মজুর লাগিয়ে দেড় বিঘা আলু খেতে বীজ, সার নিয়ে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যেই কিছুটা জমির আলু পাতা কালো হয়ে গিয়েছে। গাছের ডাঁটাগুলিও ক্রমশ ঢলে পড়ছে।” ওই খেতে কোনও ফলন পাওয়ার আশায় নেই তাঁর। সঞ্জয়, গয়ারামের মতো পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু চাষিরই এখন মাথায় হাত।
দফতর সূত্রে খবর, জেলার আলু প্রধান এলাকা গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড, শালবনি ছাড়াও কেশপুর, ঘাটাল, দাসপুর ১, চন্দ্রকোনা ১ ও ২, লালগড়-সহ দশটি ব্লকের একাধিক এলাকায় কম বেশি ওই রোগের লক্ষণ মিলেছে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে খারাপ আবহাওয়া ছাড়াও ফসলের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য অত্যধিক সার দেওয়া, বীজ আলু বাঁচানোর জন্য আলু ছোট ছোট করে কেটে লাগানোর ফলে আলুর আবহাওয়ার সঙ্গে যুঝে নেওয়ার ক্ষমতা কমে গিয়েছে। তবে কর্তাদের মত, জ্যোতি আলু ছাড়াও ধসা রোগ বেশি হচ্ছে কেবাইশ, পোকরাজ প্রজাতির আলুতে। তবে, কৃষি দফতরের তরফে মাইকিং, লিফলেট বিলি ছাড়াও কী কী ওষুধ স্প্রে করতে হবে তা জানিয়ে রীতিমতো প্রচার চালাচ্ছে।

নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আলুর গাছ।
এমনটা চলতে থাকলে জেলার আলু উৎপাদন জোর ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা কৃষি দফতরের। এখনই বাজারে ১৫-১৬ টাকা দরে আলু বিকোচ্ছে। অন্য বছর এই সময় আলুর দাম থাকে ৫-৬ টাকা। এ বার হিমঘর থেকে আলু বের করা এবং ভিন রাজ্যে আলু রপ্তানি সব ক্ষেত্রেই নানা সরকারি বিধি নিষেধ থাকা সত্ত্বেও আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বলে অধিকাংশের মত। এর মধ্যে ধসার প্রকোপ অব্যহত থাকলে আলুর বাজারদর আরও বাড়বে।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কলকাতা কৃষি ভবন থেকে কৃষি দফতরের ধসা রোগ বিশেষজ্ঞ উত্তম রায় চৌধুরী, ইন্দ্রানী নস্কর জেলার শালবনি, গড়বেতার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।

—নিজস্ব চিত্র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.