|
|
|
|
মনোনয়নে তপ্ত খড়্গপুর কলেজ, পুলিশের লাঠি
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
কলেজ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে অশান্তিকে কেন্দ্র করে লাঠিচার্জ করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে খড়্গপুর কলেজে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে এসএফআই, ছাত্র পরিষদ (সিপি) ও বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-র বিরুদ্ধে। যদিও টিএমসিপি অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। টিএমসিপি-এর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে এবিভিপি ঘটনার দায় চাপিয়েছে পুলিশের ওপর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ লাঠি চালায়। এবিভিপি-র ২ জন ও টিএমসিপি-র ২জনকে আটক করা হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের নির্বাচনে ফল ত্রিশঙ্কু হওয়ায় ওই কলেজে কোনও ছাত্র সংগঠনই ছাত্র সংসদ গঠন করতে পারেনি। ফলে ওই কলেজে ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রতিটি সংগঠনই একে অপরের বিরুদ্ধে কলেজে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলেছে। কলেজ নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব শুরু হতেই ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। এই কলেজের ছাত্র সংসদে ৬৬টি আসন রয়েছে। এ দিন বেলা ৩টে নাগাদ কলেজে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় টিএমসিপির বিরুদ্ধে তা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মনোনয়নপত্রের দু’টি কলেজ ব্যাগও কলেজের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। পরে অধ্যক্ষের তৎপরতায় ব্যাগ দু’টি উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চারটি ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চালায়। এবিভিপি-র শহর সভাপতি শিবু অধিকারীর অভিযোগ, “আমাদের সদস্যরা সুষ্ঠুভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছিল। তৃণমূলের ছেলেরা পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের বাধা দেয়। ওঁরা আমাদের মারধরও করে।” এসএফআইয়ের জোনাল সম্পাদক রাজীব মণ্ডলের অভিযোগ, “টিএমসিপি-র ছেলেরা আমাদের ছাত্রীদেরও মারধর করেছে। ওঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতেই এই সন্ত্রাস চালিয়েছে।” একই অভিযোগ তুলে ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুল বলেন, “তৃণমূলের বহিরাগতরা কলেজের গেটের বাইরে ও ভিতরে ঢুকে আমাদের সদস্যদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দিয়েছে। দু’জন ছাত্রী জখম হয়েছেন।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের শহর সভাপতি রাজা সরকারের পাল্টা অভিযোগ, “কলেজে গণতন্ত্র বজায় রয়েছে বলেই সকলে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছে। কিন্তু বিজেপি-র ছাত্র সংগঠনের ছাত্ররা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমাকেও কলেজের বাইরে এনে পুলিশের সামনে মেরেছে। আমাদের দুই ছাত্রী-সহ ৫ জন জখম হয়েছেন।” একই সুরে টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমা গিরির দাবি, “এসএফআই, সিপি ও এবিভিপির কোনও সমর্থন নেই। তাই তাঁরা প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ঘটনার পরই পুলিশ টিএমসিপির শেখ মোজাফ্ফর, শেখ মতি এবং বিজেপির অভিষেক সাহু-সহ মোট ৪জনকে আটক করে। যদিও তাঁরা নির্দোষ বলে দাবি করেছে টিএমসিপি ও এবিভিপি। কলেজের অধ্যক্ষ অচিন্ত্যকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গোলমালের অধিকাংশই কলেজের বাইরে হওয়ায় মনোনয়ন জমা বাধা পায়নি। তবে মনোনয়নপত্রের দু’টি ব্যাগ জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল তা উদ্ধার করা হয়েছে।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর জানান, কলেজে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে। |
|
|
|
|
|