হাতে খোলা ছুরি। রক্তে মাখামাখি জামাকাপড়। বৃহস্পতিবার বিকেলে বৌবাজারের ব্যস্ত কপালিটোলা লেন দিয়ে ছুটছেন মাঝবয়সী এক ব্যক্তি। পিছনে এক দল লোক। ছুটছে পুলিশও। সবাই চাইছে তাকে ধরতে। এক সময়ে ধরাও পড়ল সে। পুলিশ জানায়, ধৃত সঞ্জয় অগ্রবালের বাড়ি নিউ মার্কেট থানা এলাকার রানি রাসমণি রোডে। জ্ঞান মুরারকা নামে এক প্রোমোটারের সঙ্গে বিবাদের জেরে সঞ্জয় তাঁর পেটে ছুরি মেরে পালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আহত প্রোমোটারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ছুরির ঘায়ে তাঁর পেট থেকে খাদ্যনালী ও পিত্তাশয় বেরিয়ে গিয়েছে। সঞ্জয়কে বাধা দিতে গিয়ে জ্ঞান ছুরিটি চেপে ধরেছিলেন। তাতে তাঁর হাতের একটি আঙুল কেটে যায়। তাঁর পায়েও ছুরির গভীর ক্ষত মিলেছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এ দিন সন্ধ্যায় তাঁর অস্ত্রোপচার হয়।
পুলিশ জানায়, সঞ্জয়ের ছুরির আঘাতে আরও দু’জন জখম হন। তাঁরা জ্ঞানকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ ছুরিটি বাজেয়াপ্ত করেছে।
পুলিশ জানায়, বৌবাজার থানার সামনে কপালিটোলা লেনে পুরনো একটি বাড়ি ভেঙে বহুতল তৈরি হচ্ছে। ওই বাড়িতে সঞ্জয়দের পারিবারিক মুদির দোকান ছিল। বহুতল তৈরি হলে তাঁরা সেখানে দোকানঘর এবং টাকাও পাবেন বলে প্রোমোটারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সঞ্জয়ের পরিবারকে বেশ কিছু টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সঞ্জয় আরও টাকা চাওয়ার পাশাপাশি দোকানঘর তাড়াতাড়ি তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানান। জ্ঞান তাঁকে জানান, সঞ্জয় যত তাড়াতাড়ি দোকানঘর তৈরি করে দিতে বলছেন, তিনি তত তাড়াতাড়ি পারবেন না। এ নিয়ে জ্ঞানের সঙ্গে সঞ্জয়ের বিবাদ চলছিল। এ দিন ওই বহুতলের দোতলায় নির্মাণকাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ওই প্রোমোটার। সেই সময়ে সঞ্জয়ও সেখানে হাজির হয়। দোকানঘর তাড়াতাড়ি তৈরি করাকে কেন্দ্র করে ফের বচসা বাধে দু’জনের। তার জেরেই সঞ্জয় ছুরি নিয়ে হামলা চালান বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন জ্ঞানের পরিবার। |