দাবি মতো টাকা না পেয়ে একটি ফ্ল্যাট থেকে কয়েক হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন লুঠ করে নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠল এক দল হিজড়ের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে পাটুলি থানা এলাকার জোড়াবাগান রোডের একটি বহুতলে।
পুলিশ জানাচ্ছে, কারও বাড়িতে শিশু জন্মালেই হিজড়ের দল হাজির হয়ে জোর করে টাকা আদায় করছে বলে প্রায়ই অভিযোগ জমা পড়ছে। হিজড়েদের উপদ্রব কিছু দিন ধরে লালবাজার কর্তাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
কী ঘটেছিল জোড়াবাগান রোডের ফ্ল্যাটে? ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা, গৃহবধূ মিথিলা কর্মকার বৃহস্পতিবার জানান, তাঁর সদ্যোজাত পুত্রের মুখ দেখতে চেয়ে বুধবার দুপুরে একদল হিজড়ে তাঁদের বহুতলের মেন গেটে হাজির হয়। তখন বহুতলের একাংশে মিস্ত্রিরা কাজ করছিলেন। গেট খোলা পেয়ে হিজড়েরা মিথিলাদেবীদের ফ্ল্যাটের বেল বাজায়। গৃহবধূ জানান, মিস্ত্রিরা কাজ করতে এসেছে ভেবে দরজা খোলেন তিনি।
মিথিলাদেবী জানান, দরজা
খুলতেই পাঁচ জন হিজড়ের একটি দল ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ে। ছেলে হয়েছে বলে তাঁর থেকে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে ওই দলটি। সেই সময়ে তিনি, তাঁর শাশুড়ি শিপ্রাদেবী এবং সদ্যোজাত ছেলে ছাড়া আর কেউ বাড়িতে ছিলেন না। ওই বধূ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় হিজড়ের দলটি তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ।
মিথিলাদেবীর অভিযোগ, “টাকা না দিলে ওরা আমার আর মায়ের গলার হার খুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। ছেলেকে তুলে নিয়ে চলে যাবে বলেও ভয় দেখায়। তাতেও কাজ না হওয়ায় জোর করে শাশুড়িকে দিয়ে আলমারি খোলায়। সেখান থেকে পাঁচ হাজার টাকা বার করে চম্পট দেয় হিজড়েরা।” পুলিশের কাছে ওই মহিলা আরও জানান, হিজড়েরা চলে যাওয়ার পরে তিনি দেখেন, ঘর থেকে তাঁর মোবাইল ফোনও উধাও। ওই দিন সন্ধ্যায় মিথিলাদেবীর দেওর সৌরভ পাটুলি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জন হিজড়ের বিরুদ্ধে লুঠের অভিযোগ জানান।
পুলিশ জানাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হিজড়েদের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ জমা পড়ছে। আগে গৃহস্থদের বাড়িতে গিয়ে সদ্যোজাতের মুখ দেখে গানবাজনা করে সাধ্যমতো যে যা দিতেন তা-ই নিয়ে তারা সন্তুষ্ট থাকত। এখন বিষয়টি উপদ্রবের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। হুমকি দিয়ে তারা যে ভাবে মোটা টাকা আদায় করছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন লালবাজারের কর্তারা। বুধবারের ঘটনাটি নিয়ে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বৃহস্পতিবার জানান, ওই হিজড়েদের খোঁজ শুরু হয়েছে। এর আগে একাধিক বার বৃহন্নলাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বারেও তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা হচ্ছে। |