সহায় পুলিশ, বাসে হারানো মেয়েকে ফিরে পেল পরিবার
জয়নগরের কাছে চলন্ত বাস থেকে ছোট একটি মেয়ের কান্নার আওয়াজ কানে আসায় সন্দেহ হয়েছিল কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্টের। বাস থামিয়ে জানতে পারেন, বিহারের বাসিন্দা সাত বছরের একটি মেয়ে তার মাকে খুঁজে পাচ্ছে না। মা ও আত্মীয়েরা মেয়েটিকে বাসে রেখে নেমে গিয়েছেন রাজপুরে। ওই সার্জেন্টেরই তৎপরতায় সেই মেয়ে ফিরে গেল তার মায়ের কাছে। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার ঘটনা।
লালবাজারের এক ট্রাফিক কর্তা জানান, বারুইপুর থেকে বারাসতগামী একটি বাসে মেয়ে ছোটিকে নিয়ে উঠেছিলেন বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা সবিতা শর্মা। সবিতার স্বামী বিনোদ বারুইপুরে থাকেন। কাঠের আসবাবপত্র তৈরি করেন তিনি। দিন সাতেক আগে মেয়ে ছোটিকে নিয়ে গঙ্গাসাগর মেলা দেখতে বিনোদের কাছে এসেছেন সবিতা। কলকাতার রাস্তাঘাট তাঁর অচেনা।
এ দিন কালীঘাট মন্দির দর্শনের জন্য মেয়ে ও তিন আত্মীয়কে নিয়ে ওই বাসে ওঠেন সবিতা। ভিড় বাসে মেয়েকে এক যাত্রীর কোলে বসিয়ে রেখেছিলেন। ঢালাই ব্রিজের কাছে আত্মীয়দের সঙ্গে নেমে যান সবিতা। ভেবেছিলেন এক আত্মীয় তাঁর মেয়েকে আগেই নামিয়ে নিয়েছেন। বাস ছেড়ে দেওয়ার পরে তাঁর খেয়াল হয়, বাসেই রয়ে গিয়েছে ছোটি।
ই এম বাইপাসে অজয়নগরের কাছে যান নিয়ন্ত্রণ করছিলেন পূর্ব যাদবপুর ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট কাজল দাস। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, চলন্ত বাস থেকে মেয়েটির কান্না শুনে সন্দেহ হওয়ায় ওয়াকিটকিতে যোগাযোগ করেন সহকর্মী তাপস চক্রবর্তীর সঙ্গে। বাসের নম্বর জানিয়ে তাপসকে বলেন, বারাসতগামী বাসটিকে দাঁড় করাতে। নিজেও মোটরবাইকে চেপে বাসটির পিছু নেন তিনি। ততক্ষণে তাপস বাসটিকে দাঁড় করিয়েছেন। বাসের অন্য যাত্রী এবং কন্ডাক্টরকে জিজ্ঞাসা করে ওই ট্রাফিক সার্জেন্টরা জানতে পারেন ছোটির মা তাকে ফেলে
ঢালাই ব্রিজে নেমে গিয়েছেন। মাকে খুঁজে না পেয়ে তাই চিৎকার করে কান্না জুড়েছে মেয়ে।
এর পরেই ঢালাই ব্রিজের কাছে গড়িয়া মোড়ের কর্তব্যরত ট্রাফিক কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সার্জেন্টরা। সেখানকার কর্মীদের বলা হয়, মেয়ে হারিয়ে গিয়েছে বলে কোনও মহিলা সেখানে রিপোর্ট করছেন কি না নজর রাখতে। মহিলা বা তাঁর স্বামীর মোবাইল নম্বর জোগাড় করার চেষ্টাও করেন কাজল ও তাপস। কিছুক্ষণ পরে গড়িয়া মোড়ের ট্রাফিক কর্মীদের থেকে খবর আসে, এক দম্পতি মেয়ে হারানোর খবর দিতে এসেছেন। দেরি না করে ছোটিকে মোটরবাইকে বসিয়ে গড়িয়া মোড়ে পৌঁছন কাজল ও তাপস। ছোটিই চিনিয়ে দেয় তার বাবা-মাকে।
এ দিন বিকেলে ছোটির বাবা বিনোদ জানান, তিনি তাঁর স্ত্রী-মেয়েকে আত্মীয়দের সঙ্গে বাসে তুলে দিয়ে সাইকেলে পিছনে যাচ্ছিলেন। শহিদ ক্ষুদিরাম মেট্রো স্টেশনে সাইকেল রেখে স্ত্রী, মেয়ে ও আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করে তাঁরও কালীঘাট যাওয়ার কথা ছিল। গড়িয়া মোড়ের কাছাকাছি এসে বিনোদ স্ত্রী-র ফোন পান। বিনোদ বলেন, “আমি সবিতাকে বলি, আত্মীয়দের সঙ্গে রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকতে। আমি পৌঁছে ওঁদের নিয়ে গড়িয়া মোড়ের ট্রাফিক পুলিশদের কাছে যাই। কিছুক্ষণ পরে দেখি মেয়েকে নিয়ে পুলিশ অফিসারেরাই চলে এসেছেন আমাদের কাছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.