পাহাড় গিয়েছে চুরি! না ঠিক পাহাড় নয়, পাহাড়ের উচ্চতা। তা-ও আবার একটুখানি নয়, প্রায় ১০০ ফুট। ঠিক এমনটাই ঘটেছে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট কুকের ক্ষেত্রে। শুধু তা-ই নয়, গত কয়েক বছরে শৃঙ্গের চেহারাটাই বদলে গিয়েছে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, এই ঘটনার মূলে রয়েছে ১৯৯১ সালের ভয়ঙ্কর তুষারঝড়। তাতেই নাকি কার্যত উড়ে গিয়েছিল পাহাড় চুড়োর ৩৩ ফিট বরফ। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই খানিকটা কমেছিল উচ্চতা। তার পরেই ভৌগোলিক ভাবে শৃঙ্গের উচ্চতা মেপে দেখা গিয়েছিল, ১২ হাজার ৩১৬ ফুট। তবে এতেই থামেনি কুক।
সম্প্রতি নিখুঁত জিপিএস-যন্ত্র ব্যবহার করে উচ্চতা পরিমাপকারী একটি অভিযান সারার পর ইউনিভার্সিটি অব ওটাগো-র গবেষকেরা দাবি করেছেন, শৃঙ্গের বর্তমান উচ্চতা ১২ হাজার ২১৭ ফুটে এসে ঠেকেছে। অর্থাৎ আগের হিসেবের থেকে ৯৯ ফুট কম। অবশ্য চার গবেষক-অভিযাত্রীর দলটি চূড়ান্ত শৃঙ্গ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। খারাপ আবহাওয়ার কারণে সামিটের মাত্র কয়েক মিটার নীচ থেকেই তাঁদের ফিরে আসতে হয়। কিন্তু সে কারণে উচ্চতা মাপার ক্ষেত্রে কোনও রকম অসুবিধা হয়নি বলেই জানিয়েছেন গবেষক অভিযাত্রীরা।
অভিযাত্রী তথা গবেষক পাস্কাল সিরগুয়ে বলেছেন, “১৯৯১ সালের সেই তুষারধসের ঠিক পরে পরেই চুড়োটির চেহারা বদলাতে শুরু করেছিল ঠিকই, কিন্তু উচ্চতার ফারাকটা সে ভাবে বোঝা যেত না।” কিন্তু গবেষণা বলছে, কুড়ি বছরেরও বেশি সময় ধরে আরও গলে গিয়েছে চুড়োর বরফ। আর তার মূল কারণ বিশ্ব উষ্ণায়ন বলেই জানালেন সিরগুয়ে। তাঁর কথায়, “এই উষ্ণায়নের কারণে বরফ গলে উচ্চতাই শুধু কমে যাচ্ছে না, বদলে যাচ্ছে তুষার-শৃঙ্গগুলির চরিত্রও।”
নিউজিল্যান্ডের প্রশাসনের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ বার থেকে সরকারি ভাবে মাউন্ট কুকের নতুন উচ্চতাটিকেই ব্যবহার করা হবে। |